বনফুল সুস্থ -শুদ্ধ জীবন প্রত্যয়বাণী শিল্পী। তাই জটিল সংগ্রামের আবর্তে মানুষের জীবন যখন হাঁসফাস করছিল, সেই পটভূমিকায় দাঁড়িয়ে এক আদর্শ জীবনবােধকে অন্বেষণ। করেছেন তার গল্পে।

সমাজের চরম অত্যাচারের যুগেও মানুষের চরিত্রের সনাতন মূল্যবােধের উদ্বোধনে দৃঢ় বিশ্বাসী ছিলেন বনফুল। তাই সর্বনাশা সামাজিক ভাঙন ও মানবিক মূল্যবােধের অবক্ষয়ের যুগে। এক সমাজ-সন্ধানী মানবিক

অজান্তে গল্পে রূপলাভ করেছে আমাদের সমাজের আত্মকেন্দ্রিক ভালােবাসার এক নির্মম রূপ — যে ভালােবাসা বস্তুু কেন্দ্রিকতার আবরণে মানবিক বােধ সমূহকে আচ্ছন্ন করে, মানুষ যার জন্য

মহৎ, চরিত্রবান মানুষের জীবন চিত্রণের পাশাপাশি বনফুল ভণ্ড মানুষের চরিত্রস্বরূপ উন্মোচনেও সিদ্ধহস্ত। “পরিবর্তন” গল্পে দাম্পত্য জীবনের চরম ট্রাজেডির নিষ্ঠুর বর্ণনা দিয়ে ভণ্ড পুরুষের ঠুনকো দাম্পত্য

“বাড়তি মাশুল” গল্পে বনফুল নির্মম অদৃষ্টের হাতে মানুষের চরম বিড়ম্বনার কথা রূপায়িত করেছেন। গল্পের বক্তা একজন ‘ডেলি প্যাসেঞ্জার’। ‘সমস্ত দিন আপিসে কলম পিষে উৰ্ধ্বশাসে হাওড়ায়

অন্ধ বিশ্বাস আর কুসংস্কারের বশে মানবজীবনের চরম দুর্ভোগের কথা রূপায়িত হয়েছে “দিবা-দ্বিপ্রহর” গল্পে। গল্পটিতে সাপের ওঝার প্রতি মানুষের মূঢ় আস্থাকে বনফুল হাস্যরসিকতার মধ্য দিয়ে ধিক্কার

ছােটগল্পের খণ্ড জীবনের রূপায়নে অখণ্ড, বৃহতের, মহতের ব্যঞ্জনা কিভাবে সৃষ্টি করা যায়, বনফুল তা খুব ভালােভাবেই জানতেন। যে খণ্ডজীবনের পরিচয় আমরা হাটে-বাজারে, পথে-ঘাটে, লােকালয়ে, নির্জনে,

বনফুল সুস্থ-স্বাভাবিক জীবন-ভাবনা অনুসারী ছিলেন, উচ্ছলতাকে তিনি মনে প্রাণে মেনে নিতে পারেন নি। যৌবনের স্বাভাবিক ধর্মে বনফুল আস্থাশীল। যৌবনের উজ্জ্বলতা, উদ্দামতা, সীমালঙ্গন, বিড়ম্বনা, গতিপ্ৰাণতার প্রতি

বনফুলের সমাজ মনস্কতার আর এক বাস্তবসম্মত রূপ ‘উৎসবের ইতিহাস” গল্পে বিধৃত। শিক্ষিত মধ্যবিত্ত চাকুরী প্রার্থী যুবকের এক বিপর্যস্ত মানসিকতার গল্প এটি। প্রথম শ্রেণীর এম.এ, নরেন

ব্যক্তিমানুষের ভণ্ডামীর প্রতি বনফুল যেমন খড়গহস্ত হয়েছিলেন, তেমনি সমাজের পচনশীল মানসিকতাকে তিনি ছেড়ে কথা বলেননি। সমাজের দোষত্রুটি, স্বভাব, স্বরূপ তিনি অত্যন্ত বাস্তবসম্মতভাবে তুলে ধরেছেন। সামাজিক