Banglasahitta

Welcome to Banglasahitta

One Step to the Heart

Banglasahitta

Welcome to Banglasahitta

One Step to the Heart

শহীদুল জহিরের ‘জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা’ উপন্যাসের মূলভাব, শিল্পমূল্য ও সাহিত্যমূল্য বিচার, নামকরণ ও সার্থকতা মূল্যায়ন!

শহীদুল জহিরের “জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা” বাংলাদেশের আধুনিক কথাসাহিত্যের একটি অনন্যসাধারণ রচনা। এই উপন্যাসে শহীদুল জহির এক সাধারণ গ্রামের জীবন এবং তাতে রাজনীতির প্রভাবকে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে তুলে ধরেছেন। এখানে উপন্যাসের চরিত্রগুলো যেন গ্রামের সাধারণ মানুষ, যারা তাদের জীবনের সরলতা ও জটিলতার মধ্যে বাস করছে।

এই উপন্যাসে জীবন আর রাজনীতির বাস্তবতাকে একইসাথে তুলে ধরে একটি দ্বৈত চিত্র অঙ্কন করা হয়েছে। জহিরের বর্ণনায় গ্রামের মানুষের আবেগ, সংকট, স্বপ্ন, এবং সংগ্রাম অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। তার ভাষা ব্যবহার অত্যন্ত সরল ও গভীর, যা পাঠককে গল্পের অভ্যন্তরে টেনে নেয়।

উপন্যাসের মূল উপজীব্য হল বাঙালি সমাজের রাজনৈতিক, সামাজিক ও মানবিক সংকট, যেখানে স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক চেতনার সাথে যুক্ত নানা সংকট ও প্রতিকূলতা চমৎকারভাবে উঠে এসেছে।

“জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা” উপন্যাসটি বাংলাভাষী পাঠকদের কাছে আজও সমানভাবে জনপ্রিয় এবং সাহিত্যের এক মূল্যবান সম্পদ।

উপন্যাসের চরিত্র
  • আবদুল মজিদ,
  • বদু মওলানা,
  • মোমেনা,
  • আজিজ পাঠান।
অন্যান্য চরিত্রগুলো প্রকৃতপক্ষে পুরো কাহিনীটিকে সুনিপুণভাবে সাজানোর জন্য পার্শ্বচরিত্রের ভূমিকায় অবতীর্ণ ছিল।
ল্যাটিন লেখক গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেসের ‘নিঃসঙ্গতার একশো বছর’ দ্বারা বিশেষভাবে প্রভাবিত ছিলেন শহীদুল জহির। তার লেখনীতে তাই যাদুবাস্তবতার কিছু মিশেল পাওয়া যায়। একইসাথে কাহিনী বর্ণনায় সর্বদাই তিনি গল্পের ভেতর গল্প বলে গেছেন। এতে করে তিনি বারবার যেমন ফিরে এসেছেন একাত্তরে, আবার একইসাথে বিচরণ করেছেন পঁচাশিতে। উপন্যাসে প্রতিনিয়ত মজিদসহ মহল্লার মানুষের ক্রমাগত আত্মসমর্পণ, ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন এবং একত্তার পরবর্তী সময়ে আবারও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের পুনর্বাসন ভবিষ্যতের বার্তা দেবার পাশাপাশি তৎকালীন তথা বর্তমান প্রজন্মকেও রাজনৈতিক বাস্তবতার সাথে নিবিড়ভাবে পরিচিত করে।

“তারা আজীবন যে দৃশ্য দেখে কিছু বোঝে নাই- যেখানে একটি মোরগ তাড়িয়ে নিয়ে বেড়ায় মুরগিকে- মহল্লায় মিলিটারি আসার পর তাদের মনে হয়েছিল যে, প্রাঙ্গনের মুরগির মতো তার মা এবং কিশোরী কন্যাটি, পরিচিত ভালোবাসার স্ত্রী, তাদের চোখের সামনে প্রাণভয়ে এবং অনভিপ্রেত সহবাস এড়ানোর জন্য ছুটে বেড়াচ্ছে। ব্যাপারটি এমন মর্মান্তিকভাবে তাদের জানা থাকে যে, তাদের বিষণ্ণতা ছাড়া আর কোনো বোধ হয় না। তাদের বিষণ্ণ লাগে কারণ, তাদের মনে হয় যে একমাত্র মুরগির ভয় থাকে বলাৎকারের শিকার হওয়ার আর ছিল গুহাচারী আদিম মানবীর।”

বাস্তবতার প্রতিফলন: এই উপন্যাসে সমাজের রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতাকে নিখুঁতভাবে তুলে ধরা হয়েছে, যা পাঠকদের সমাজের গভীরে প্রবেশ করতে সহায়তা করে।

প্রকৃতির বর্ণনা: উপন্যাসটিতে গ্রামের প্রাকৃতিক দৃশ্য, নদী, ফসলের মাঠ ও গ্রামীণ জীবনের নিখুঁত বর্ণনা পাওয়া যায়, যা পাঠকদের সেই সময় ও স্থানের অভিজ্ঞতা দেয়।

সাধারণ মানুষের কাহিনী: গল্পের কেন্দ্রে রয়েছে গ্রামের সাধারণ মানুষ ও তাদের জীবনসংগ্রাম, যা তাদের মানবিক আবেগ ও সীমাবদ্ধতাকে ফুটিয়ে তোলে।

রাজনৈতিক প্রভাব: উপন্যাসটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও গ্রামীণ জীবনের উপর এর প্রভাবকে তুলে ধরে, যা চরিত্রগুলোর জীবনে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে।

প্রগতিশীল চিন্তা: গ্রামবাসীদের মধ্যে নতুন চিন্তাধারা এবং স্বাধিকার আন্দোলনের চেতনা উপন্যাসটিকে সময়োপযোগী ও প্রগতিশীল করে তোলে।

মহাকাব্যিক আঙ্গিক: লেখকের ভাষাশৈলী এবং গল্প বলার পদ্ধতি এক ধরনের মহাকাব্যিক আবেদন তৈরি করে, যা পাঠকদের গভীরভাবে প্রভাবিত করে।

মানবিক সংকটের চিত্র: মানুষে মানুষে সম্পর্ক, তাদের দুঃখ-দুর্দশা, প্রেম-বিরহ ও লোভ-সংকীর্ণতা এই উপন্যাসে জীবন্তভাবে প্রকাশ পেয়েছে।

গভীর ভাষাশৈলী: লেখকের ভাষা গভীর ও তীক্ষ্ণ, যা পাঠকদের আবেগকে আলোড়িত করে এবং সমাজের জটিলতা উপলব্ধি করতে সহায়তা করে।

শ্রুতিমধুর বর্ণনা: শহীদুল জহিরের ভাষা ও বর্ণনার ধরণ অত্যন্ত মিষ্টি এবং প্রাঞ্জল, যা গল্পকে শোনার মতো অভিজ্ঞতা দেয়।

নৈর্ব্যক্তিক দৃষ্টিভঙ্গি: লেখক নিরপেক্ষ থেকে চরিত্রগুলোকে দেখিয়েছেন, যাতে পাঠক নিজের মতামত তৈরি করতে পারে এবং গল্পের ঘটনার প্রতি সহানুভূতি অনুভব করতে পারে।

এই বৈশিষ্ট্যগুলো “জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা” উপন্যাসটিকে বাংলা সাহিত্যের একটি অসামান্য সৃষ্টি হিসেবে তুলে ধরে।

শহীদুল জহিরের “জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা” উপন্যাসটি বাংলাদেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতার একটি গভীর প্রতিফলন। গ্রামীণ জীবনের চিত্র, সাধারণ মানুষের কাহিনী এবং রাজনীতির প্রভাবকে দক্ষতার সাথে উপস্থাপন করে এটি বাংলা সাহিত্যে এক অসাধারণ সংযোজন। জহিরের অনন্য ভাষাশৈলী, বর্ণনা ও গল্প বলার ধরণ পাঠককে গভীরভাবে প্রভাবিত করে এবং গল্পের চরিত্র ও ঘটনাগুলোর সাথে একাত্ম হতে সহায়তা করে।

উপন্যাসটি কেবলমাত্র একটি গল্প নয়; এটি বাঙালি সমাজের মানবিক ও রাজনৈতিক সংকটকে উপলব্ধি করার এক শক্তিশালী মাধ্যম। “জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা” কালের সীমানা পেরিয়ে পাঠকদের কাছে এক মূল্যবান সাহিত্যকর্ম হিসেবে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে।

আর্টিকেল’টি ভালো লাগলে আপনার ফেইসবুক টাইমলাইনে শেয়ার দিয়ে দিন অথবা পোস্ট করে রাখুন। তাতে আপনি যেকোনো সময় আর্টিকেলটি খুঁজে পাবেন এবং আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন, তাতে আপনার বন্ধুরাও আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হবে।

গৌরব রায়

বাংলা বিভাগ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট, বাংলাদেশ।

লেখকের সাথে যোগাযোগ করতে: ক্লিক করুন

6.7k

SHARES

Related articles

অস্তিত্ববাদ, অস্তিত্ববাদের সংজ্ঞার্থ : অস্তিত্ববাদের পটভূমি, অস্তিত্ববাদের বৈশিষ্ট্য গুলো লিখ?

অস্তিত্ববাদ, অস্তিত্ববাদের সংজ্ঞার্থ : অস্তিত্ববাদের পটভূমি, অস্তিত্ববাদের বৈশিষ্ট্য গুলো লিখ?

অস্তিত্ববাদ একটি দর্শন। দার্শনিক চিন্তার শুরু থেকেই বাস্তববাদ, ভাববাদ, জড়বাদ, যান্ত্রিকবাদ প্রভৃতি দার্শনিক মতবাদগুলো মানুষের অস্তিত্ব সম্পর্কীয় বাস্তব সমস্যার পরিবর্তে বস্তু, ঈশ্বর, তত্ত্ব বা কোন

Read More
ট্রাজেডি হিসেবে সফোক্লিসের 'ইডিপাস' নাটকের সার্থকতা বিচার! ইডিপাস নাটকের শিল্পমূল্য বিচার! ইডিপাস নাটকের গঠন কৌশল

ট্রাজেডি হিসেবে সফোক্লিসের ‘ইডিপাস’ নাটকের সার্থকতা বিচার! ইডিপাস নাটকের শিল্পমূল্য বিচার! ইডিপাস নাটকের গঠন কৌশল

গ্রিক ট্রাজেডি নাটক ‘ইডিপাস’ বাংলায় অনুবাদ করেন সৈয়দ আলী আহসান। গ্রিক ট্রাজেডি যে এতটা নির্মম এবং করুণরসাত্মক হয় তাঁর বাস্তব উদাহরণ ‘ইডিপাস’ নাটকটি। রক্তের সম্পর্কের

Read More
"সোজন বাদিয়ার ঘাট" কাব্যের শৈল্পিক বৈশিষ্ট্য ও কবিমানস

“সোজন বাদিয়ার ঘাট” কাব্যের শৈল্পিক বৈশিষ্ট্য ও কবিমানস

ভূমিকা: বাংলা কাব্যের ভুবনে বাংলাদেশের মানসকবি জসীম উদদীনের (১৯০৩-১৯৭৬) আবির্ভাব বিশ শতকের তৃতীয় দশকে। তিনি রবীন্দ্র-নজরুল ও তিরিশের কবিদের বলয় ও প্রভাব মুক্ত থেকে কবিতায় এক নতুন ও ব্যতিক্রম স্বর সৃষ্টি করেছেন। সোজন বাদিয়ার ঘাট (১৯৩৩) কবি জসীম উদদীনের দ্বিতীয় আখ্যান কাব্য। সমকালীন কবিরা যেখানে প্রায় সকলেই নগরচেতনা, নাগরিক জীবন ও আচার-আচরণ সাহিত্য চর্চার ক্ষেত্রে তুলে এনেছেন, জসীম উদদীন সেখানে তার কবিতায় আবহমান বাংলার প্রকৃতি, সমাজ ও সাধারণ মানুষের জীবন-চিত্রকেই আন্তরিক নিষ্ঠা, অকৃত্রিম ভালবাসা ও দরদ দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন। ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’ কবির বিকল্প জীবনবোধ, জীবনপদ্ধতি এবং জীবন অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ উপন্যাসধর্মী রচনা। এ কাব্যে প্রেমভাবনা ও সমাজভাবনা দুইই পরস্পরের পরিপূরক হয়ে উঠেছে। নিম্নে … “সোজন বাদিয়ার ঘাট” কাব্যের শৈল্পিক বৈশিষ্ট্য ও কবিমানস ১. অসাম্প্রদায়িক ও উদার দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয়: “সোজন বাদিয়ার ঘাট” কাব্যে অসাম্প্রদায়িকতা দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় পাওয়া যায়। এ আখ্যান কাব্যে হিন্দু-মুসলিমদের সহাবস্থান, দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও তৎকালীন পরিবেশ ও ঘটনা পরিক্রমায় লিখিত। আবহমানকাল থেকেই বাংলাদেশের অনেক অঞ্চল/গ্রামে হিন্দু-মুসলমানদের একত্রে বসবাস, সম্প্রীতির পরিচয় আছে। বিভিন্ন কারণে দুই ধর্মের মধ্যে মারামারী ও দাঙ্গা-হাঙ্গামা লেগে যায়। কবি এরূপ বর্ণনায় অসাম্প্রদায়িক হিসাবে চরম নিরপেক্ষতার বর্ণনা দিয়েছেন। “নমু পাড়ায় পূজা পরব, শঙ্ক কাঁসর বাজে, … মুসলমানের পাড়ায় বসে ঈদের মহোৎসবে,” ২. প্রেমভাবনা ও সমাজভাবনা দুইই পরস্পরের পরিপূরক: “সোজন বাদিয়ার ঘাট” কাব্যেপন্যাসের প্লট নির্মিত হয়েছে মুসলমান চাষীর ছেলে সোজন আর হিন্দু নমুর মেয়ে দুলীর অপূর্ব প্রেমের কাহিনীকে ঘিরে; তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিগত সামন্ত যুগের জমিদারি প্রথার নিষ্ঠরতার আলেখ্য। গ্রামের হিন্দু বালিকা দুলীর সাথে মুসলমানের ছেলে সোজনের আবল্য বন্ধুত্ব। বন্ধু থেকে আস্তে আস্তে প্রেমে পরিণত হয়। কবিতায়- “নমুদের মেয়ে আর সোজনের ভারি ভাব দুইজনে, লতার সঙ্গে গাছের মিলন, গাছের লতার সনে।“ প্রেমের তুলনায় সমাজ অতিমাত্রায় কাব্যের জায়গা দখল করে নিয়েছে। কাব্যে সামাজিক অনুষঙ্গের উপস্থাপন করেছেন কবি। কবিতাতে তিনি সমাজের সর্বশ্রেণীর মানুষকে আসার আহ্বান করেছেন। সমাজের মানুষের সংস্কৃতি, আচার-ব্যবহার, খেলাধুলা প্রভৃতির পরিচয় পাওয়া যায় কাব্যটিতে। দুলির মায়ের কণ্ঠে সমাজের রূঢ় রূপটি প্রকাশ পায়- “পোড়ারমুখীলো, তোর জন্যেত পাড়ায় যে ঠেকা ভার, চূণ নাহি ধারি এমন লোকেরো কথা হয় শুনিবার!” ৩. জীবনবোধ, জীবনপদ্ধতি এবং জীবন অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ রচনা: কবি পল্লিগীতির সংগ্রাহক হিসেবে কাজ করেছিলেন দীনেশচন্দ্র সেনের সাথে। শহরজীবনে বসবাস করলেও তিনি পল্লিগীতির সংগ্রাহক হিসেবে গ্রামে কাজ করেছেন। ফলে তিনি মানুষের সাথে মিশতে পেরেছেন এবং তাঁর জীবনবোধ ও জীবন অভিজ্ঞতা হয়েছে সমৃদ্ধ। তাঁর জীবনপদ্ধতি ব্যতিক্রমধর্মী এবং বড় কবিতার ধারক হিসেবেই তিনি পরিচিত। ৪. উপন্যাসধর্মী রচনা: “সোজন বাদিয়ার ঘাট” একটি উপন্যাসধর্মী রচনা। কাব্যের কবিতাগুলো জসীম উদদীন উপন্যাসের ঢংয়ে লিখেছেন। এ যেন লোকজ ঐতিহ্যের প্রতীক। ৫. মৌলিক রচনাধর্মী ও অনন্য: অন্যেরা বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ বা ধর্মীয় সম্পর্কিত কাহিনী থেকে নিয়েছেন। কিন্তু কবি জসীমউদ্দীন কাহিনী নিয়েছেন ঘর থেকে, গ্রাম থেকে, পল্লী গ্রাম-বাংলা থেকে। এখানে তিনি মৌলিক ও অনন্য। ৬. আধুনিকতা ও উদারনীতির বৈশিষ্ট্য: সময়কে এড়িয়ে না গিয়ে তাকে স্বীকার করে নিয়ে লেখা আধুনিকতার বৈশিষ্ট্য। প্রাণিজগতের কল্যাণকামনা করে মানবিক হওয়াও আধুনিকতার বৈশিষ্ট্য। এসবের সংমিশ্রণে জসীম উদদীন কবিতায় অবয়ব দিয়েছেন। হিন্দু কিশোরী দুলালী বা দুলী ও মুসলমান কিশোর সুজনের প্রেম নিয়ে মুসলমান ও হিন্দুদের মধ্যে দাঙ্গা লেগে যায়। নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে জসীমউদ্দীন লিখলেন- এক গেরামের গাছের তলায় ঘর বেঁধেছি সবাই মিলে . . . এক মাঠেতে লাঙল ঠেলি, বৃষ্টিতে নাই, রৌদ্রে পুড়ি সুখের বেলায় দুখের বেলায় ওরাই মোদের জোড়ের জুড়ি। ৭. চরিত্র নির্মাণে দক্ষতা: ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’ কাব্যে লেখক চরিত্রের আমদানি করেছেন, চরিত্রের বিকাশ ঘটিয়েছেন এবং চরিত্রের পরিণতি দেখিয়েছেন। চরিত্র যেন অনুভূতির মাধ্যমে কথা বলছে। তিনি চরিত্র অনুযায়ী ভাষার ব্যবহারেও দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। ৮. কাহিনী ও ভাষা বিন্যাসে পাণ্ডিত্য: কাহিনী বিন্যাসে, ভাষা ব্যবহারে এবং উপমা-চিত্রকল্পে তার রচনায় লোক-কাব্য, পুঁথি-সাহিত্য, লোক-সঙ্গীতের কিছু প্রভাব রয়েছে। লোকজ উপাদানের ব্যবহার থাকলেও আঞ্চলিক শব্দের ব্যবহার কম; প্রায় নেই বললেই চলে। এখানেও জসীমের মুন্সিয়ানার পরিচয় পাওয়া যায়। ৯. ছন্দ ও অলঙ্কারের প্রয়োগ: আধুনিক কবিতায় অলঙ্কারের প্রয়োগ লক্ষণীয়। কবি জসীমউদ্দীন কবিতায় উপমা-উৎপ্রেক্ষা, সমাসোক্তি ও অন্যান্য অলঙ্কারের যুতসই ব্যবহার ও প্রয়োগ দেখা যায়। তার অলঙ্কারের বেশিরভাগ উপাদানই লোকজ।

Read More
কপালকুণ্ডলার বংশ পরিচয় কী?

কপালকুণ্ডলার বংশ পরিচয় কী?

কপালকুণ্ডলা: বাংলা সাহিত্যের একটি চরিত্র। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে নবকুমার এক জনবিচ্ছিন্ন দ্বীপে আটকা পড়েন। সেখানে এক কাপালিক তাকে বলি দিতে উদ্যত হয়। তখন কাপালিকের পালিতা কন্যা কপালকুণ্ডলা তার

Read More
Gourab Roy

Gourab Roy

I completed my Honors Degree in Bangla from Shahjalal University of Science & Technology in 2022. Now, I work across multiple genres, combining creativity with an entrepreneurial vision.

বিশ্বসেরা ২০ টি বই রিভিউ

The content is copyright protected.