Banglasahitta

Welcome to Banglasahitta

One Step to the Heart

Banglasahitta

Welcome to Banglasahitta

One Step to the Heart

লক্ষ্মণের প্রতি শূর্পনখা’ পত্রের কাব্যশৈলী বিচার কর

পত্রটির উৎসসূত্র বাল্মীকি রামায়ণ। পিতৃসত্য পালনের জন্য পঞ্চবটী অরণ্যে নির্বাসিত বনবাসী লক্ষ্মণের যৌবন-কান্তিতে মুগ্ধ হয়ে লঙ্কাধিপতি রাবণের ভগিনী শূর্পনখা তার প্রেমে পড়ে। আর তার প্রেম নিবেদনের উদ্দেশ্যেই দশরকন্দন রামানুজ লক্ষ্মণকে এই পত্রটি লিখেছে। মোট ৭টি স্তবক পত্রটি সমাপ্ত হয়েছে। পত্রিকাটি একটি কুমারী হৃদয়ের প্রণয়জনিত রোমান্টিক ভাবোচ্ছ্বাসে ভরা।

বনবাসী লক্ষ্মণের পরিচয় শূর্পনখা জানত না। তাই পত্রিকার সূচনাই হয়েছে তার সবিশেষ পরিচয় জানবার কৌতূহলে। প্রশ্নবাক্য দিয়ে পত্রটি শুরু হয়েছে যা তাকে প্রথম থেকেই চমৎকার নাটকীয়তা দান করেছে।

‘কে তুমি, বিজন বনে একাকী;

বিভূতিভূষিত অঙ্গ? কি কৌতুক কহ,

বৈশ্বানর, লুকাইছ ভস্মের রে?

মেঘের আড়ালে যেন পূর্ণশশী আজি?’

প্রথম স্তবকে দেখি দুটি প্রশ্নবাচক সর্বনাম ‘কে’ ও ‘কি’। এর ব্যবহার। দ্বিতীয় চরণে ‘কি কৌতুক কই’ অংশটি ‘ক’-এর অনুপ্রাস ঘটায় সুন্দর শ্রুতিমাধুর্য সৃষ্টি হয়েছে। আর শুরুতেই কবি লক্ষ্মণের অপূর্ব রূপলাবণ্যের উৎকর্ষ বোঝাতে এনেছেন, চমৎকার উপমা—‘মেঘের আড়াল যেন পূর্ণশশী আজি?’

দ্বিতীয় স্তবক থেকে অজ্ঞাত পরিচয় অরণ্যবাসী লক্ষ্মণকে কেন্দ্র করে শূর্পনখার হৃদয়ের প্রেমোচ্ছ্বাসের পরিপূর্ণ উন্মীলন ঘটেছে। সে নিজের সমস্ত প্রণয়বাসনাকে অবারিতভাবে উন্মোচন করেছে এই পত্রে। তাঁর মনে অচেনা এই পুরুষকে ঘিরে আবর্তিত হয়েছে একের পর এক প্রশ্ন, চতুর্থ স্তবক পর্যন্ত এর ক্রমবিকাশ ঘটেছে।

পঞ্চম স্তবকে হঠাৎ কিছু বিপরীত সুর শূর্পনখার কণ্ঠে ধ্বনিত হয়। চতুর্থ স্তবক পর্যন্ত যে রাজকীয় বৈভবের জীবনযাপনের বর্ণনা শূর্পনখার কণ্ঠে শোনা গেছিল তা এই স্তবকে এসে বাঁক পরিবর্তন করে। রাজপরিবারের কন্যা হওয়ায় জীবনে কখনো তাকে কৃষ্ণসাধন করতে হয়নি। কিন্তু অরণ্যবাসী সন্ন্যাসীবেশধারী লক্ষ্মণের প্রতি তার প্রেমনিষ্ঠা এতটাই প্রবল যে মুহূর্তেই সে নিজেকে তার প্রেমাস্পদের মতো একই দুঃখ বরণের জন্য প্রস্তুত করে নিতে পারে। তাই তাকে বলতে শুনি—

‘এ বেশ ভূষণ ত্যজি উদাসিনী বেশে

সাজি, পূজি, উদাসীন, পদ-পদ্ম তব!’

অর্থাৎ অরণ্য জীবন ও রাজপরিবারের ঐশ্বর্য-প্রাচূর্যপূর্ণ জীবনের মধ্যে যে ভেদারেখা তা সে এভাবেই মুছে দিয়ে নিজেকে প্রেমাস্পদের সঙ্গে একই আসনে অধিষ্ঠিত করতে চেয়েছে।

ষষ্ঠ স্তবকেও এসে এই প্রথম আমরা শূর্পনখাকে নিজ পরিচয় দিতে দেখলাম, এতক্ষণ সে নিজের নাম ও আত্মপরিচয় গোপন করে রেখেছিল।

পত্রটির সপ্তম স্তবকটি একটু ভিন্ন প্রকৃতির। শূর্পনখা এই পত্রটি একই কালপর্বে লেখেনি, তার উল্লেখ আছে এই পর্বে।

“এত দূর লিখি/লেখন, সখীর মুখে শুনিনু হরষে/….., রাজরথী দশরথ অযোধ্যাপতি,/পুত্র তুমি, পুত্র তুমি, হে কন্দর্প গর্ব্ব-খর্ব্ব করি, তাঁহার,” এই উক্তি থেকেই বোঝা যায়, কিছুদূর পত্র লেখবার পর একটি ছেদ পড়েছে। তারপর আবার পত্র লেখা শুরু করেছে শূর্পনখা। সুতরাং, এই একটি পঙ্ক্তির মধ্যে দিয়ে পত্ররচনার ভিন্ন ভিন্ন কালপর্বের ইঙ্গিত কবি দিয়েছেন।

তাছাড়া, সখীমুখে সে লক্ষ্মণের পরিচয় জেনেছে অনেক পরে, তাই পত্রের প্রথমে সন্ন্যাসী বেশধারী সুন্দর যুবক লক্ষ্মণ সম্বন্ধে তার যা যা প্রশ্ন, কৌতূহল সবই স্বাভাবিকতা হয়েছে।

ওভিদের লেখা ‘Heroides’ কাব্যের সপ্তম পত্রের সঙ্গে এই পত্রিকার বিষয়গত সাদৃশ্য রয়েছে। ওভিদের রচনায় রাজা সিকাত্তশের বিধবা পত্নী রাণী ডিডো ভিন্নদেশী বিপন্ন রাজকুমার ‘ইনিসে’র প্রেমে পড়ে এরূপ প্রেমাকুল অভিব্যক্তিতে তাঁর প্রেমপত্রটি লিখেছিলেন। মধুসূদন রচিত শূর্পনখা-র পত্রিকাতেও এই একই রকম রোমান্টিকতা চোখে পড়ে। তাছাড়া, রামায়ণ থেকে আমরা জেনেছি শূর্পনখাও ছিলেন এক বিধবা, যার স্বামী ছিলেন কালকের বংশের রাক্ষস-রাজ বিদ্যুৎজিহ, যিনি যুদ্ধের সময় ভুলক্রমে রাবণের হাতে নিহত হয়েছিলেন। এজন্য রাবণ তাঁর ভুলের প্রায়শ্চিত্ত স্বরূপ বিধবা ভগিনীর যথাসম্ভব মানসিক সুখ শান্তি উৎপাদনের জন্য দণ্ডকারণ্যে শূর্পনখার যথেচ্ছ ভ্রমণের ব্যবস্থা করেন, আর তখনই তার সামনে আবির্ভূত হয় বনচারী ভিনদেশী রাজকুমার লক্ষ্মণ। আর তাকে দেখেই তার রূপমুগ্ধ হয়ে পড়েন শূর্পনখা। রামায়ণের এই কাহিনি মধুসুদনের হাতে এসে নতুন রূপ পেয়েছে। রামায়ণের কাহিনির প্রথমভাগটুকু বর্জন করেছেন মাইকেল, তার স্বামী প্রসঙ্গের উল্লেখ এ পত্রে পাই না, সে নিতান্তই কুমারী রাজকন্যা, এবং পত্রের শুরুতেই তার সম্পর্কে প্রচলিত কুৎসিত ধারণা থেকে পাঠককে মুক্ত থাকতে বলেছেন কবি। এ আদেশ সচেতন ভাবেই কবি করেছেন, তাতে পত্রটিকে এক রোমান্টিক প্রণয়পত্রের মর্যাদা দানে বিশেষ সুবিধাই হয়েছে।

এই পত্রকাব্যটি মূলত বর্ণনাধর্মী, এতে অন্যান্য পত্রের মতো খুব বেশি নাটকীয়তা নেই, প্রেমপত্রের যে স্বাভাবিক সহজ সরল আবেদন তা এই পত্রটিতে আগাগোড়াই রক্ষিত হয়েছে। এ চিঠিতে জটিলতা, মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্বের অবকাশ কম, তাই তা সহজেই পাঠক হৃদয়কে স্পর্শ করে!

নাটকীয়তা স্বল্প পরিমাণে থাকলেও এ কাব্যের সংলাপে কোথাও কোথাও নাটকীয়তা আনয়নের জন্য সম্বোধন সূচক বাক্যের ব্যবহার রয়েছে।

‘হে তেজস্বি, শীঘ্ৰ আসি কহ মোরে শুনি’

আর্টিকেল’টি ভালো লাগলে আপনার ফেইসবুক টাইমলাইনে শেয়ার দিয়ে দিন অথবা পোস্ট করে রাখুন। তাতে আপনি যেকোনো সময় আর্টিকেলটি খুঁজে পাবেন এবং আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন, তাতে আপনার বন্ধুরাও আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হবে।

গৌরব রায়

বাংলা বিভাগ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট, বাংলাদেশ।

লেখকের সাথে যোগাযোগ করতে: ক্লিক করুন

6.7k

SHARES

Related articles

অস্তিত্ববাদ, অস্তিত্ববাদের সংজ্ঞার্থ : অস্তিত্ববাদের পটভূমি, অস্তিত্ববাদের বৈশিষ্ট্য গুলো লিখ?

অস্তিত্ববাদ, অস্তিত্ববাদের সংজ্ঞার্থ : অস্তিত্ববাদের পটভূমি, অস্তিত্ববাদের বৈশিষ্ট্য গুলো লিখ?

অস্তিত্ববাদ একটি দর্শন। দার্শনিক চিন্তার শুরু থেকেই বাস্তববাদ, ভাববাদ, জড়বাদ, যান্ত্রিকবাদ প্রভৃতি দার্শনিক মতবাদগুলো মানুষের অস্তিত্ব সম্পর্কীয় বাস্তব সমস্যার পরিবর্তে বস্তু, ঈশ্বর, তত্ত্ব বা কোন

Read More
ট্রাজেডি হিসেবে সফোক্লিসের 'ইডিপাস' নাটকের সার্থকতা বিচার! ইডিপাস নাটকের শিল্পমূল্য বিচার! ইডিপাস নাটকের গঠন কৌশল

ট্রাজেডি হিসেবে সফোক্লিসের ‘ইডিপাস’ নাটকের সার্থকতা বিচার! ইডিপাস নাটকের শিল্পমূল্য বিচার! ইডিপাস নাটকের গঠন কৌশল

গ্রিক ট্রাজেডি নাটক ‘ইডিপাস’ বাংলায় অনুবাদ করেন সৈয়দ আলী আহসান। গ্রিক ট্রাজেডি যে এতটা নির্মম এবং করুণরসাত্মক হয় তাঁর বাস্তব উদাহরণ ‘ইডিপাস’ নাটকটি। রক্তের সম্পর্কের

Read More
"সোজন বাদিয়ার ঘাট" কাব্যের শৈল্পিক বৈশিষ্ট্য ও কবিমানস

“সোজন বাদিয়ার ঘাট” কাব্যের শৈল্পিক বৈশিষ্ট্য ও কবিমানস

ভূমিকা: বাংলা কাব্যের ভুবনে বাংলাদেশের মানসকবি জসীম উদদীনের (১৯০৩-১৯৭৬) আবির্ভাব বিশ শতকের তৃতীয় দশকে। তিনি রবীন্দ্র-নজরুল ও তিরিশের কবিদের বলয় ও প্রভাব মুক্ত থেকে কবিতায় এক নতুন ও ব্যতিক্রম স্বর সৃষ্টি করেছেন। সোজন বাদিয়ার ঘাট (১৯৩৩) কবি জসীম উদদীনের দ্বিতীয় আখ্যান কাব্য। সমকালীন কবিরা যেখানে প্রায় সকলেই নগরচেতনা, নাগরিক জীবন ও আচার-আচরণ সাহিত্য চর্চার ক্ষেত্রে তুলে এনেছেন, জসীম উদদীন সেখানে তার কবিতায় আবহমান বাংলার প্রকৃতি, সমাজ ও সাধারণ মানুষের জীবন-চিত্রকেই আন্তরিক নিষ্ঠা, অকৃত্রিম ভালবাসা ও দরদ দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন। ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’ কবির বিকল্প জীবনবোধ, জীবনপদ্ধতি এবং জীবন অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ উপন্যাসধর্মী রচনা। এ কাব্যে প্রেমভাবনা ও সমাজভাবনা দুইই পরস্পরের পরিপূরক হয়ে উঠেছে। নিম্নে … “সোজন বাদিয়ার ঘাট” কাব্যের শৈল্পিক বৈশিষ্ট্য ও কবিমানস ১. অসাম্প্রদায়িক ও উদার দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয়: “সোজন বাদিয়ার ঘাট” কাব্যে অসাম্প্রদায়িকতা দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় পাওয়া যায়। এ আখ্যান কাব্যে হিন্দু-মুসলিমদের সহাবস্থান, দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও তৎকালীন পরিবেশ ও ঘটনা পরিক্রমায় লিখিত। আবহমানকাল থেকেই বাংলাদেশের অনেক অঞ্চল/গ্রামে হিন্দু-মুসলমানদের একত্রে বসবাস, সম্প্রীতির পরিচয় আছে। বিভিন্ন কারণে দুই ধর্মের মধ্যে মারামারী ও দাঙ্গা-হাঙ্গামা লেগে যায়। কবি এরূপ বর্ণনায় অসাম্প্রদায়িক হিসাবে চরম নিরপেক্ষতার বর্ণনা দিয়েছেন। “নমু পাড়ায় পূজা পরব, শঙ্ক কাঁসর বাজে, … মুসলমানের পাড়ায় বসে ঈদের মহোৎসবে,” ২. প্রেমভাবনা ও সমাজভাবনা দুইই পরস্পরের পরিপূরক: “সোজন বাদিয়ার ঘাট” কাব্যেপন্যাসের প্লট নির্মিত হয়েছে মুসলমান চাষীর ছেলে সোজন আর হিন্দু নমুর মেয়ে দুলীর অপূর্ব প্রেমের কাহিনীকে ঘিরে; তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিগত সামন্ত যুগের জমিদারি প্রথার নিষ্ঠরতার আলেখ্য। গ্রামের হিন্দু বালিকা দুলীর সাথে মুসলমানের ছেলে সোজনের আবল্য বন্ধুত্ব। বন্ধু থেকে আস্তে আস্তে প্রেমে পরিণত হয়। কবিতায়- “নমুদের মেয়ে আর সোজনের ভারি ভাব দুইজনে, লতার সঙ্গে গাছের মিলন, গাছের লতার সনে।“ প্রেমের তুলনায় সমাজ অতিমাত্রায় কাব্যের জায়গা দখল করে নিয়েছে। কাব্যে সামাজিক অনুষঙ্গের উপস্থাপন করেছেন কবি। কবিতাতে তিনি সমাজের সর্বশ্রেণীর মানুষকে আসার আহ্বান করেছেন। সমাজের মানুষের সংস্কৃতি, আচার-ব্যবহার, খেলাধুলা প্রভৃতির পরিচয় পাওয়া যায় কাব্যটিতে। দুলির মায়ের কণ্ঠে সমাজের রূঢ় রূপটি প্রকাশ পায়- “পোড়ারমুখীলো, তোর জন্যেত পাড়ায় যে ঠেকা ভার, চূণ নাহি ধারি এমন লোকেরো কথা হয় শুনিবার!” ৩. জীবনবোধ, জীবনপদ্ধতি এবং জীবন অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ রচনা: কবি পল্লিগীতির সংগ্রাহক হিসেবে কাজ করেছিলেন দীনেশচন্দ্র সেনের সাথে। শহরজীবনে বসবাস করলেও তিনি পল্লিগীতির সংগ্রাহক হিসেবে গ্রামে কাজ করেছেন। ফলে তিনি মানুষের সাথে মিশতে পেরেছেন এবং তাঁর জীবনবোধ ও জীবন অভিজ্ঞতা হয়েছে সমৃদ্ধ। তাঁর জীবনপদ্ধতি ব্যতিক্রমধর্মী এবং বড় কবিতার ধারক হিসেবেই তিনি পরিচিত। ৪. উপন্যাসধর্মী রচনা: “সোজন বাদিয়ার ঘাট” একটি উপন্যাসধর্মী রচনা। কাব্যের কবিতাগুলো জসীম উদদীন উপন্যাসের ঢংয়ে লিখেছেন। এ যেন লোকজ ঐতিহ্যের প্রতীক। ৫. মৌলিক রচনাধর্মী ও অনন্য: অন্যেরা বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ বা ধর্মীয় সম্পর্কিত কাহিনী থেকে নিয়েছেন। কিন্তু কবি জসীমউদ্দীন কাহিনী নিয়েছেন ঘর থেকে, গ্রাম থেকে, পল্লী গ্রাম-বাংলা থেকে। এখানে তিনি মৌলিক ও অনন্য। ৬. আধুনিকতা ও উদারনীতির বৈশিষ্ট্য: সময়কে এড়িয়ে না গিয়ে তাকে স্বীকার করে নিয়ে লেখা আধুনিকতার বৈশিষ্ট্য। প্রাণিজগতের কল্যাণকামনা করে মানবিক হওয়াও আধুনিকতার বৈশিষ্ট্য। এসবের সংমিশ্রণে জসীম উদদীন কবিতায় অবয়ব দিয়েছেন। হিন্দু কিশোরী দুলালী বা দুলী ও মুসলমান কিশোর সুজনের প্রেম নিয়ে মুসলমান ও হিন্দুদের মধ্যে দাঙ্গা লেগে যায়। নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে জসীমউদ্দীন লিখলেন- এক গেরামের গাছের তলায় ঘর বেঁধেছি সবাই মিলে . . . এক মাঠেতে লাঙল ঠেলি, বৃষ্টিতে নাই, রৌদ্রে পুড়ি সুখের বেলায় দুখের বেলায় ওরাই মোদের জোড়ের জুড়ি। ৭. চরিত্র নির্মাণে দক্ষতা: ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’ কাব্যে লেখক চরিত্রের আমদানি করেছেন, চরিত্রের বিকাশ ঘটিয়েছেন এবং চরিত্রের পরিণতি দেখিয়েছেন। চরিত্র যেন অনুভূতির মাধ্যমে কথা বলছে। তিনি চরিত্র অনুযায়ী ভাষার ব্যবহারেও দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। ৮. কাহিনী ও ভাষা বিন্যাসে পাণ্ডিত্য: কাহিনী বিন্যাসে, ভাষা ব্যবহারে এবং উপমা-চিত্রকল্পে তার রচনায় লোক-কাব্য, পুঁথি-সাহিত্য, লোক-সঙ্গীতের কিছু প্রভাব রয়েছে। লোকজ উপাদানের ব্যবহার থাকলেও আঞ্চলিক শব্দের ব্যবহার কম; প্রায় নেই বললেই চলে। এখানেও জসীমের মুন্সিয়ানার পরিচয় পাওয়া যায়। ৯. ছন্দ ও অলঙ্কারের প্রয়োগ: আধুনিক কবিতায় অলঙ্কারের প্রয়োগ লক্ষণীয়। কবি জসীমউদ্দীন কবিতায় উপমা-উৎপ্রেক্ষা, সমাসোক্তি ও অন্যান্য অলঙ্কারের যুতসই ব্যবহার ও প্রয়োগ দেখা যায়। তার অলঙ্কারের বেশিরভাগ উপাদানই লোকজ।

Read More
কপালকুণ্ডলার বংশ পরিচয় কী?

কপালকুণ্ডলার বংশ পরিচয় কী?

কপালকুণ্ডলা: বাংলা সাহিত্যের একটি চরিত্র। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে নবকুমার এক জনবিচ্ছিন্ন দ্বীপে আটকা পড়েন। সেখানে এক কাপালিক তাকে বলি দিতে উদ্যত হয়। তখন কাপালিকের পালিতা কন্যা কপালকুণ্ডলা তার

Read More
Gourab Roy

Gourab Roy

I completed my Honors Degree in Bangla from Shahjalal University of Science & Technology in 2022. Now, I work across multiple genres, combining creativity with an entrepreneurial vision.

বিশ্বসেরা ২০ টি বই রিভিউ

The content is copyright protected.