নবম সর্গের মূল ঘটনা মেঘনাদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া। তাই এর নামকরণ করা হয়েছে “সংস্ক্রিয়া’ একদিকে রামচন্দ্রের শিবিরে উল্লাস আনন্দের উচ্ছ্বাস এবং অপরদিকে লঙ্কাপুরীতে হতাশা ও শােকের প্রকাশ এই সর্গে বর্ণিত হয়েছে। শােকাভিভূত রাবণ বুঝতে পারলেন নিয়তি অনিবার্য ও আসন্ন ধ্বংসের দিকে তাঁকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছেন। চরম শক্তি পরীক্ষার আছে তিনি মৃত পুত্রের অন্ত্যোষ্টির জন্য সাতদিন সময় প্রার্থনা করলেন এবং রামচন্দ্র তা পূর্ণ করলেন। শােকযাত্রা নিহত বীর মেঘনাদের মৃতদেহ বহন করে সমুদ্রতীরে শ্মশানে উপস্থিত হল। প্রমীলাও সহমরননের উদ্দেশ্যে শ্মশানে উপস্থিত। নিদারুণ এই ঘটনার তত্ত্বাবধান করছেন স্বয়ং রাবন। মেঘানাদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠানে শত শত রথীসহ মহাবীর রামচন্দ্রের পক্ষ থেকে শ্মশানে উপস্থিত হলেন। আকাশপথে আবির্ভূত হলেন দেবতারা। শালীয় কৃত্যাদি সম্পন্ন করে মেঘনাদের দেহ চিতায় স্থাপন করা হল, সকালের কাছে বিদায় নিয়ে প্রমীলাও চিতায় আরোহণ করলেন। তীব্র বেদনা নিয়ে রাবণপুত্র ও পুত্রবধূর প্রতি শেষ বিদায়বানী উচ্চারণ করলেন। রাবণের দুঃখে কৈলাসে মেঘনাদ অধীর হলে পার্বতী তাকে শান্ত করলেন। অগ্নিদেবতা মহাদেবের আদেশে এ চিত্র প্রজ্বলিত করে তুললেন। সকলে সচকিত হয়ে দেখলেন আগ্নেয় পথে আসীন মেঘনাদ পত্নীসহ আকাশপথে অদৃশ্য হলেন। দুগ্ধধারায় চিতা নির্ধারিত করা হল। চিতাভস্ম সকলে সমুদ্র জলে বিসর্জন দিল। লক্ষ রাক্ষস শিল্পী দ্রুত চিতার উপর এক অভ্রভেদী মঠ নির্মাণ করল। সমুদ্রে স্মান করে রাক্ষসগণ অশ্রুবর্তন করতে করতে শূন্য মনে লঙ্কায় প্রত্যাবর্তন করল। সপ্তদিবানিশি লঙ্কাবাসিগণ শোক পালন করল।
মেঘনাদবধ কাব্য অষ্টম সর্গ ব্যাখ্যা
অষ্টম সর্গের নাম প্রেতপুরী। লক্ষ্মণের দুর্দশায় শােকে মর্মাহত রামচন্দ্রের করুন অবস্থা দেখে দেবী পার্বতী অত্যন্ত দুঃখ বােধ করলেন। মহাদেব পার্বতীর দুঃখের কারণ জেনে প্রতিকারের উপায়