মেঘনাথবধ কাব্য মধুসূদনের শ্রেষ্ঠ রচনা। Will not this make me immortal?” মেঘনাথবধ কাব্য’- এর প্রুফ সংশােধনের সময় বন্ধু রাজনারায়ন বসুকে এই প্রশ্ন করেছিলেন মধুসূদন, এবং এর প্রশ্নের উত্তর সদর্থক বলাই বাহুল্য। ১৮৬১ খ্রীষ্টাব্দে গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। সঙ্গে সঙ্গে এর অভিনবত্ব সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করে। একদিকে ভাষা, ছন্দ, বিষয়বস্তু; অন্যদিকে উপস্থাপনার বৈশিষ্ঠ্যে কাব্যটি অনবদ্য । প্রগতিশীল পাশ্চাত্য ভাবনার অনুগামী পাঠকেরা এই কাব্য প্রকাশের মধ্যদিয়ে আধুনিকতার শুভ সূচনা হয়েছে বলে মনে করেন। রাজনারায়ন বসু, গেীরদাস বসাক প্রমুখ বন্ধুজনকে মধুকবির বিভিন্ন সময়ে ইংরেজীতে চিঠি লেখার মাধ্যমেও এই কাব্যরচনার পূর্বে ও সমকালে তার নিরলস পরিশ্রম ও প্রস্তুতির বিবরণ জানা যায় ল তাঁর পত্রাবলীর তথ্য উৎস থেকেই ‘মেঘনাথবধ কাব্য রচনার প্রেক্ষাপট এবং তাঁর সেই সংক্রান্ত পঠনপাঠনের পরিচয় পাওয়া যায়।
মেঘানাথবধ কাব্য রচনাকালে কবি মনের দিক থেকে সর্বাধিক দ্বিধামুক্ত হয়েছিলেন। আপন ক্ষমতাকে যাচাই করে নেবার যে সাধনা তিলােত্তমায় নির্মানের আগুন জ্বালিয়েছিল তা সিদ্ধ হয়েছে। আপন ক্ষমতায় উদ্বোধনে কবিপ্রাণভরসার আশ্রয় পেয়েছে। এবারে ক্ষমতা যাচাইয়ের ছেলেমানুষীনয় আর। সৃজনের নিশ্চিত লক্ষ্যাভিমুখেপরম যাত্রা।
কবি যশ প্রার্থী মধুসূদন যখন কলকাতায় এলেন তখন তিনি বিশিষ্ট ইংরেজ জানা। বাঙালী, ব্যর্থ ইংরেজি কাব্যের রচয়িতা। বাংলা সাহিত্যের আসরে তার প্রবেশাধিকার তখনও প্রমানিত হয় নি। সম্ভবত ১৮১৬ra সালে জুন-জুলাই মাসে তিনি মেঘনাথধ ফাৰ রচনা করেন। ১৮৫৮ সালে জুন-জুলাই মাসে শর্মিষ্ঠা নাটক রচিত হয়। সমকালের মানদন্ডে উল্লেক নাটক, প্রথম সার্থক প্রহসন রচনা করে মধুসূদনের আত্মশ্লাঘা কিছুটা তৃপ্ত হয়, ক্যাপটিভ লেডি রচনার পর প্রতিকূল সমালােচনায় বিক্ষুব্ধ বিথিত হৃদয়ে আত্মশক্তির প্রতি শ্রদ্ধা ফিরে আসে। পদ্মাবতী নাটকে গ্রীক পুরানের কাহিনীর বাঙালীকরন ঘটে। তিলােত্তমা সম্ভব কাব্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দ নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলে। তার মধ্য দিয়েও আসে নবপথিকৃতের সম্মানলাভ রসজ্ঞ সমালােচকদের প্রশংসা বর্ষনে । তিলােত্তমার গাম্ভীর্যের পরেই ব্ৰজঙ্গনার ললিত পেলবতায়ও তিনি হাত পাকান । ব্ৰজঙ্গনার প্রথম দিকের কবিতাগুলি তিলােত্তমার শেষ হবার পূর্বেই রিত। কাজেই মেঘনাথবধ কাব্য রচনা আরম্ভের পূর্বে মধুসূদন বাংলা সাহিত্যে শুধুমাত্র প্রবেশের ছাড়পত্র পাননি, ইতিহাস সৃষ্টিরমর্যাদা লাভ অনিবার্য ছিল। মধুসূদনের মধ্যে জয়লাভ-ইচ্ছুক যে সত্তাটি চিরকাল বাস করত, জীবনের নানা কার্যে প্রবৃত্তি জুগিয়েছে সেই বিশেষ মনােবনৃত্তিটিই। কবি পরবর্তী কালে বারবার যে যশােলাভের কামনা ব্যক্ত করেছেন, কাব্যরচনার মধ্য দিয়ে যে অমরত্বের সাধনা করেছেন, ঐ জিগীষাবৃত্তিতেই তার উদ্ভব। কবির এই জিগীতাবৃত্তি আজ বহুলাংশে তৃপ্ত। কাজেই কেবলমাত্র সেই বৃত্তির প্রেরনায় বিচিত্র পথে ছুটে বেড়াবার প্রয়ােজন অনেকখানি সংযত হয়েছে। ভারতীয় মহাকাব্য থেকে গ্রীক মহাকাব্য, আবার সঙ্গে বর্তমান সমাজজীবন – কি বিচিত্র ভাৰৰস্তু একইকালে কবি কাব্যও নাট্যবদ্ধ করেছেন। তিলােত্তমার গাম্ভীর্য আর ব্রজাঙ্গনার কোমলতা, একের অমিত্রাক্ষর ছন্দ, অপরের মিত্রাক্ষর বিচিত্র জটিলতা একই সময় আরও করার সাধনার তিনি সিদ্ধ । স্রষ্টা মানসের এই বহুমুখী গতি বিচিত্র বলে | প্রশংসনীয়।
মেঘনাথৰধ কাব্য রচনাকালে মধুসূদন যশস্বী লেখক। বাংলা সাহিত্যে নতুনের দ্বার উন্মােচন করেছেন বলেও কোনাে কোনাে মহল থেকে ইতিমধ্যেই তিনি অভিনন্দিত হচ্ছেন। দ্বিতীয়ত, তার মত দ্রুতগামী ও অতিব্যস্ত লেখকের পক্ষে প্রস্তুতির সাধনা যথেষ্টেই হয়েছে, গ্রীক পুরান কাহিনীর বাঙালীকরন যেমন অংশত সকল হয়েছে তেমনি ভারতীয় রামায়ন-মহাভারতের কাহিনীর নবরূপায়ন অনেকটা অভ্যস্ত হয়ে এসেছে, কবি আত্মার ছন্দ-আধার অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহারে নৈপুন্য এসেছে, গভীর উদাত্ত এবং কোমলকরনে অধিকার জন্মেছে। এই লগ্নে মেঘানাথবধ রচিত। এর চেয়ে মহালগ্ন তার কর্মজীবনেবােধহয় আর সম্ভব ছিল না। মধুসূদন একটি চিঠিতে বন্ধুকে লিখেছিললেন, “It is my ambition to engraft the exquisite Graces of the Greek mythology on our own in the present poem, I mean to give free scope to my inventing powers (such as they are) and to borrow as little as I can form Valmiki” পুরানকাহিনী থেকে কাব্য উপাদানের অংশবিশেষ সংগ্রহ করে স্বদেশের মহাকাব রামায়ন থেকে তাঁর কাব্যের বিষয়বস্তু নির্বাচন করেছেন মধুসূদন। বাল্মীকি এবং কৃত্তিবাসী রামায়নের লঙ্কাকান্ডের অন্তর্গত কাহিনী মেঘনাথবধ কাব্য’র মূল অবলম্বন। রাবনপুত্র বীরবাহুর মৃত্যুর পর মেঘনাথ সেনাপতি পদে অভিষেক নিকুলিম্ভা যজ্ঞাগারে লক্ষ্মনের হাতে তার মৃত্যু, রাবনের সঙ্গে যুদ্ধে শক্তিশেলে লক্ষ্মন আহত হওয়া এবং মেঘনাথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া – মােটামুটিভাবে সাড়ে তিনদিনের কাহিনী নিয়ে নয়টি সর্গে মধুসূদন অমিত্রাক্ষর ছন্দে মেঘনাথবধ কাব্য রচনা করেন। বাল্মীকি ও কৃত্তিবাস থেকে ঋনগ্রহন করেছেন। এছাড়া পাশ্চাত্য কাব্য-মহাকাব্য থেকে অথবা নিজস্ব কল্পনাশক্তির সায্যে মধুসূদন তাঁর কাব্যের ‘মধুচক্র’ নির্মান করেছেন।
‘মেঘনাথবধ কাব্য রচনার সময় প্রধানত হােমারের ইলিয়াড়ই ছিল মধুকবির আদর্শ। বন্ধু রাজনারায়ন বসুকে একটি পত্রে লিখেছিলেন – “…….. if the father of our poetry had given Ram human companions I could have made a regular | Iliad of the death of Meghnad” ইলিয়াড়ের অন্যতম বীর হেক্টরের আদর্শেই মধুসূদন তাঁর প্রিয় মেঘনাথ চরিত্র নির্মান করেছেন। মেঘনাথবধ কাব্য এর সূচনা অংশ রচনাকালে বিষয়বস্তু সম্পর্কে সংশয় থাকলেও মূল রচনা শুরু করে মধুসূদন রামায়নের কাহিনী নিয়ে যে সার্থক কাব্য রচনা সম্ভব সেসম্পর্কে নিশ্চিন্ত বােধ করেন। কাব্য রচনাকালে একটি চিঠিতে তিনি লেখেন- “I am going on with Meghnad by fits and starts. Perhaps the poem will be finished by the end of the year …. I don’t are a pins head of Hinduism. I love the grand mythology of our ancestors. It is fullofpoetry.”
রামায়ন কাহিনীর সীমাবদ্ধতা সম্পর্কেও তিনি যথেষ্ট ওয়াকিবহল ছিলেন। এই সীমাবদ্ধতার জন্য ইচ্ছামত ঘটনা সংস্থান করা সম্ভব হয় নি। প্রথম থেকেই সম্পূর্ন কাব্যের একটি পরিকল্পনা তিনি করে নিয়েছিলেন। রচনাকালের একট চিঠিতে আছে – “I mean to extend in to 6 সর্গ”। প্রয়ােজনমত তিনি চরিত্রের নাম পরিবর্তন করেছেন, সর্বদা সংস্কৃত নিয়ম মানা প্রয়ােজনবােধ করেননি। কাব্য সৌন্দর্যের দিক থেকে যা প্রয়ােজন গ্রহণ করবেন, অপ্রয়ােজনীয় অংশ বর্জন করবেন – এছাড়া অন্য কোন নিয়ম মানতে তিনি রাজি ছিলেন না। একটি চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন, -“The name is ‘বরুনানী’ but I have turned our one syllable. To my ears this word is not half so musical as ‘বারুনী’ and I don’t know why should bother myself about Sanskrit rules” এইসব বক্তব্য কবির প্রখর কাব্যবােধ ও শিল্প-সচেতনতার পরিচায়ক।
মহাকাব্য রচনার আকাঙ্খা যে মধুসূদন কৈশাের থেকে লালন করেছিলেন, এ কথা সকলেরই জানা। “মেঘনাথবধ কাব্য’ এর প্রারম্ভেই কবির সজ্ঞান অভিপ্রায়টি ফুটে উঠেছে যখন তিনি বলেছেন – “গাহিব মা বীরবসে ভাসি। মহাগীত।” অর্থাৎ বীরবস প্রধান মহাকাব্য রচনাই তাঁর উদ্দেশ্য। প্রাচীনকাল থেকে মধুসূদনের কাল পর্যন্ত বাংলা ভাষায় মহাকাব্য রচিত হয় নি, বাংলা কাব্য চিরকালই গীতিপ্রধান। তাই বাংলা ভাষায় মহাকাব্য রচনা করে বাংলা সাহিত্যের নতুন দিগন্ত উন্মােচিত করার আকাঙ্খাও মধুসূদননের হৃদয়ে জাগরুক থাকা সম্ভব। যে কাহিনী তীর সবচেয়ে প্রিয় ছিল সেই কাহিনী থেকেই তিনি তাঁর বিষয়স্তুআহরন করলেন।
মেঘনাদবধ কাব্য দুখন্ডে প্রকাশিত হয়েছিল। ১৮৬১ খ্রীষ্টাব্দে ৪ঠা জানুয়নারী প্রথম পাঁচটি সর্গ নিয়ে প্রকাশিত হয় প্রথম খন্ড। বাকি চারটি সর্গ নিয়ে দ্বিতীয় খন্ড প্রকাশিত হয় ১৮৬১ খ্রীষ্টাব্দের প্রথমার্ধের মধ্যেই।
মেঘনাথবধ কাব্য সম্পর্কে সমসাময়িক সমালােচকদের অভিমত
রাজনারায়ন বসু
কবির ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন রাজনারায়ণ বসু। এই কাব্যের কঠোর সমালোচনা করেছিলেন তিনি। কবি স্বয়ং যদিও রচনাকালে পান্ডুলিপি পাঠিয়ে মতামত ও পরামর্শ চেয়েছিলেন। রাজনারায়ন লিখেছেন, “জাতীয় ভাব বােধহয় মাইকেল মধুসূদনেতে | যেরূপ অল্প পরিলক্ষিত হয় অন্য কোন বাঙালী মন হয় না। তিনি তাঁহার কবিতাকে হিন্দু পরিচ্ছদ দিয়াছেন বটে কিন্তু সেই হিন্দু পরিচ্ছদের নিম্ন হইতে কোট প্যান্টালুন দেখা যায়।
আর্যকুলসূর্য রামচন্দ্রের প্রতি অনুরাগ প্রকাশ না করিয়া রাক্ষসদিগের প্রতি অনুরাগ ও পক্ষপাত, নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে হিন্দুজাতির শ্রদ্ধাস্পদ বীর লক্ষ্মণকে নিতান্তই কাপুরুষের ন্যায় আচরন করানাে, ঘর ও দূষনের মৃত্যু অবতারন রামচন্দ্রের হাতে হইলেও তাহাদিগকে এতপুরে স্থাপন, বিজাতীয় ভাবের অনেক দৃষ্টান্তের মধ্যে এই তিনটি এখানে উল্লিখিত হইতেছে।”
কালীপ্রসন্নসিংহ
এই কাব্যের যথেষ্ট প্রশংসা করেছিলেন এবং তার বিদ্যোৎসাহীনী সভার পক্ষ থেকে কবিকে সম্বর্ধনা দেওয়ার আয়ােজন করছিলেন। তিনি মেঘনাথবধ কাব্য সম্পর্কে লিখেছিলেন, “বাংলা সাহিত্যে একপ্রকার কাব্য ঢুদিত হইবে, বােধ হয় সরস্বতী ও জানিতেন না।….. লােকে অপার ক্লেশ করিয়া জলধি-জল গৃহমধ্যে প্রার্থনাধিক রত্নলাভে কতার্থ হইয়াছি। এক্ষনে আমরা মনে করিলে শিরোভূষনে ভূষিত করিতে পারি একপ্রকার কাব্য উদিত হইলে, বােধ হয় সরস্বতী জানিতেন না। …… লােকো অপার ক্লেশ করিয়া জলধি-জল হিতে রত্ন উদ্ধারপূর্বক বহু মুনি অলঙ্কার সন্নিবেশিত করে। আমরা বিনা ক্লেশে পুহমধ্যে প্রার্থনাধিক গলাভে কৃতার্থ হইয়াছি। এক্ষনে আমরা মনে করিলে তাহারে শিরােভূ মনে ভূষিত করিতে পারি এবং অনাদর প্রকাশ করিতে পারি এবং অনাদর প্রকাশ করিতে ও সমর্থহই।”
হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
১৮৬৭ সালে প্রকাশিত মেঘনাথবধ কাব্য এর ট্রিীয় সংস্করনের ভূমিকায় হেমচন্দ্র লিখেছিলেন, এই গ্রন্থখানিতে অবার্তা যে অসামন্য কবিত্বশক্তির পরিচা | দিয়াছেন, তাদৈষ্টে বিষ্ময়াপন্ন ও চমৎকৃত হইতে হয় – সমস্ত বিবেচনা করিয়া দেখিলে বঙ্গভাষায় ইহার তুল্য দ্বিতীয় কাব্য ক্সার দেখিতে পাওয়া যায়না।……. সত্য বটে, কলি গুরু বালীকির পদচিহ্ন লক্ষ্য করিয়া নানা দেশীয় মহাকবিদের কাব্যোলান হইতে পুষ্পচয়নপূর্বক এই গ্রন্থখানি বিরচিত হইয়াছে,কিন্তু সেই সমস্ত কুসুমরাজিয়ে যে অপূর্ব মাল্য গ্রথিত হিয়াছে, তাহা বঙ্গবার্সী চিরকাল যত্ন সহকারে কণ্ঠে ধাৱন করিবেন।…… যে
হে স্বর্ণ, ম, পাতাল ত্রিভুবনের রমনীয় এই ভয়াবহ প্রানী ও পদার্থসমূহ একত্রিত করি পাঠকের দর্শনেন্দ্রিয় লক্ষন ঢিলফাকের ন্যায় দিলিত হইয়াছে, যেগন্থ পাঠ করিতে করিতে ভূতুকালে বর্তমান এবং অদৃশ্যে বিদ্যমানের ন্যায় জ্ঞান হয় – যে গ্রন্থ পাঠ করিতে করিতে কখন বা বিস্ময়, বান বা ক্রোশ এবং কমন বা করুনারসে আদ্র হইতে হয় এবং বাস্পীকুল
লােচনে যে গ্রন্থের পাঠ সমাপ্ত করিতে হয়, তাহা যে বঙ্গাসীরা চিরকাল বক্ষস্থলে ধারন করিবেন, ইহার বিচিত্ৰতাকি।”
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
‘মেঘনাথ বধ কাব্য’ সম্পর্কে বঙ্কিমচন্দ্র গুরুত্বপূর্ন সমালােচনা করিয়াছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, “The meghnadbadh is Mr Dutta’s great work. The sbject is taken from the Ramayana, the Source of inspiration to so many Indian poets. In the was with Ravana Meghnada, the most heroic of Ravan’s sons and warriors, is slain y Laksman, Ram’s brothedr. This is the subject and Mr. Dutta owes a great deal more to Valmiki than the mere story. But nevertheless the poem is his own work from beginning to end. The scenes, characters machinery and episodes are in many respects of Mr Duttga has displayed a high oder of art Tottomer and Miltonas well as to Valmiki, he is largely indebted in many ways, but he has assimilated and made his own most of the ideas which he has taken and his poem is on the whole the most valuable work in morden Bengali literature.
রবীন্দ্রনাথঠাকুর
মেঘনাথবধ কাব্য এর কবিকল্পনার অভিনবত্ব স্বীকার করে যা বলেছিলেন তা উদ্ধারযােগ্য – “ মেঘনাথবধ কাব্যে, কেবল ছন্দবন্ধে ও রচনা প্রনালীতে নহে, তাহার ভিতরকার ভাব ও রসের একটা অপূর্বপরিবর্তন দেখিতে পাই। তিনি (মধুসুদন) স্বতস্ফূর্ত প্রচন্ড লীলার মধ্যে আন্দবােধ করিয়াছেন; ইহার রথ-রথি অশ্বে গজে পৃথিবী কম্পমান; যাহা। চায় তাহার জন্য এই শক্তি শাস্ত্রের বা অস্ত্রের কোন কিছুর বাধা মানিতে সম্মত নহে। … যে অটল শক্তি ভয়ঙ্কর সর্বনাশের মাঝখানে বসিয়াও কোনমতেই হার মানিতে চাহিতেছে নাকবি সেই ধৰ্ম্মাবিদ্রোহী মহাদন্ডের পরাভবে সমুদ্রতীরের শ্মশানে দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া কাব্যের উপসংহার করিয়াছেন। যে শক্তি অতি সাবধানে সমস্তই মানিয়া চলে, তাহাকে যেন মনে মনে অবজ্ঞা করিয়া যে শক্তি স্পর্ধাভরে কিছুই মানিতে চায় না, বিদায়কালে কাব্যলক্ষ্মী নিজের অশ্রুসিক্ত মালামানি তাহারই গলায় পরাইয়া দিল।”