ত্রিশোত্তর বাংলা কথাসাহিত্যে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (১৮৯৪-১৯৫০) অবস্থান স্বাতন্ত্র্যমণ্ডিত। বাংলা কথাসাহিত্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্লাসিক উপন্যাসগুলোর মধ্যে প্রধানতম হলো ‘আরণ্যক’। এটি বিভূতিভূষণের চতুর্থ উপন্যাস। আরণ্যক উপন্যাসটি বিভূতিভূষণের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাজাত সৃষ্টি। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে লেখকের খণ্ড খণ্ড অভিজ্ঞতার সম্মিলিত রূপ এই রচনা। উপন্যাসে মানুষ ও প্রকৃতির অদ্ভত সমন্বয় ঘটেছে শহুরে জীবনে বহুমাত্রিক চালচিত্রের পাশাপাশি তিনি অঙ্কন করেছেন শহরবিচ্ছিন্ন অরণ্য লালিত অন্ত্যজ ও প্রান্তিক বিপুল মানুষের জীবনচিত্র। তাঁর উপন্যাসে প্রাধান্য পেয়েছে গ্রাম , অরণ্য ও মানবজীবনের দ্বৈত পটভূমি। ডঃ ক্ষেত্রগুপ্ত বলেছেন, “এও পথের পাঁচালী, আর এক পথের পাঁচালী, যে পথ জনহীন আদিম অরণ্যের মধ্য দিয়ে অরণ্য ধ্বংসকারী ঘন বসতির দিকে গিয়ে ফুরিয়ে গেছে।”
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় রক্তসূত্রে ছিলেন একজন প্রকৃতিপ্রেমী শিল্পী। শৈশবের বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে বেড়ানোর অভিজ্ঞতার পাশাপাশি কর্মজীবনেও তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন কলকাতা, নাগপুর, ভাগলপুর নামক স্থানগুলোতে। ফলে তাঁর প্রকৃতিচেতনাকে সমৃদ্ধ করেছে এসব পুরনো অভিজ্ঞতাগুলো। শুধু বাংলা দেশই নয় বর্হিবাংলার বিভিন্ন অঞ্চলের বিচিত্র প্রকৃতি ও নানা স্বভাবের মানুষ তাকে আকর্ষণ করেছিল। এই অভিজ্ঞতাগুলোই হচ্ছে তাঁর মনন ও শিল্প চেতনার মূল উপাদান।
আরণ্যক উপন্যাসের পরিপ্রেক্ষিত, পরিসর-প্রাসঙ্গিকতা ও ধরন সম্বন্ধে লেখক কাহিনী আরম্ভের আগেই জানাচ্ছেন: ‘মানুষের বসতির পাশে কোথাও নিবিড় অরণ্য নাই। অরণ্য আছে দূর দেশে, যেখানে পতিত-পক্ব জম্বুফলের গন্ধে গোদাবরী-তীরের বাতাস ভারাক্রান্ত হইয়া ওঠে, ‘আরণ্যক’ সেই কল্পনালোকের বিবরণ। ‘আরণ্যক’ সম্পর্কে বিভূতিভূষণ ভূমিকার এক জায়গায় বলেছিলেন, ‘ইহা ভ্রমণবৃত্তাস্ত বা ডায়েরি নহে উপন্যাস । অভিধানে লেখে ‘ উপন্যাস ‘ মানে বানানো গল্প । অভিধানকার পণ্ডিতদের কথা আমরা মানিতে বাধ্য । তবে ‘ আরণ্যক ‘ – এর পটভূমি সম্পূর্ণ কাল্পনিক নয় । কুশী নদীর অপরপারে এমন দিগন্ত বিস্তীর্ণ অরণ্যপ্রস্তর পূর্ব্বে ছিল , এখনও আছে । দক্ষিণ ভাগলপুর ও গয়া জেলার বনপাহাড় তো বিখ্যাত । ” উপন্যাস ‘ মানে কেবল ‘ বানানো গল্প ‘ একথা আক্ষরিক অর্থে গ্রহণযোগ্য নয়। উপন্যাসকে বলা হয় ‘ মানবজীবনের গদ্যময় রূপ (prose of man’s life)। বাস্তবতার ভিত্তির ওপরই মানবজীবন – কাহিনি দাঁড়িয়ে থাকে , তবে ঔপন্যাসিক অবশ্যই বাস্তবের সঙ্গে কল্পনাকে মিলিয়ে দেন । ‘আরণ্যক’ – এর ক্ষেত্রে ঠিক তাই হয়েছে । যে অরণ্যপ্রাপ্তর – এর পটভূমি তা সম্পূর্ণ বাস্তব সত্যচরণের দেখা প্রকৃতি ও মানুষ আসলে বিভূতিভূষণেরই দেখা। স্মৃতির রেখা’র মতো দিনলিপিতে বর্ণিত নানা ঘটনা , চরিত্র এবং লেখকের মন্তব্য তাবিকল ‘ আরণ্যক ‘ – এ ব্যবহৃত হয়েছে । তাই ‘ আরণ্যক ‘ বাস্তব ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে।’
’বন্য-অশিক্ষিত-দরিদ্র-অসহায় মানুষের অদ্ভুত-অজ্ঞাত জীবনধারা আর প্রকৃতির ভিন্নতর এক মুগ্ধতার আবেশ তাঁর এই কাহিনীর ক্যানভাস। কী এক অনতিক্রম্য-দুর্বোধ্য অপরাধবোধ- অক্ষমতার অসহায়ত্ত যেন তাঁকে দিয়ে লিখিয়ে নিচ্ছে এই গল্পের সব কথামালা! দায় মোচনের আর দায়িত্ব বহনের ভার তাঁকে হয়তো ক্লান্ত করেছে বহুকাল! সেই স্মৃতি তাঁকে তাড়া করছে কি? হয়তো করছে- ভয়ংকরভাবেই করছে।
এই উপন্যাসে লেখক প্রকৃতির নিবিড় রহস্যময়তা, মায়ালোক আর আদিমতায় খুঁজে পেয়েছেন জীবনের গাঢ়তম রূপ; দেখেছেন মানুষের বিচিত্র প্রবণতা আর উপলব্ধির নব নব রূপায়ন। অভিনব দৃষ্টিকোণ থেকে অভিজ্ঞতা আর বিশেষণের নবত্বে তিনি সাজিয়েছেন গোটা কাহিনী। উপন্যাসের নায়ক সত্যচরণ শহর থেকে গ্রামীণ এস্টেটে গিয়ে মিশেছে এই পটভূমিতে। উপন্যাসে তাকে আমরা পাই সৌন্দর্যবোধসম্পন্ন একজন উদারমনা আধুনিক যুবক হিসেবে। তার মূল দায়িত্ব ছিলো প্রভূত এলাকার অরণ্য নিধন করে তাকে আবাদ কিংবা বসোপযোগী করে জমিদারকে বৈষয়িক লাভের সন্ধান দেয়া। কিন্তু ম্যানেজারির দায়িত্বে বহাল হওয়ার পর অভাব কিংবা বেকারত্ব তার সেই সৌন্দর্যবোধ, প্রকৃতিপ্রেম আর সংবেদনশীলতাকে ভোঁতা করে দিতে পারেনি ।অরণ্য প্রকৃতির গভীর থেকে গভীরে সে প্রবেশ করেছে—সৌন্দর্যৈশ্বর্যের যে অনির্দেশ্য-অব্যক্ত রহস্য থরে থরে সাজিয়েছেন প্রকৃতিমাতা, তার সন্ধান করতে গিয়ে সে আবিষ্কার করেছে কী অদ্ভুত রোমান্স এই মুক্ত জীবনে- প্রকৃতিঘনিষ্ঠ নিবিড় পরিবেশের আনন্দ কী অনির্বচনীয়!
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে লেখকের খণ্ড খণ্ড অভিজ্ঞতার সম্মিলিত রূপ এই রচনা ডায়েরি বা দিনপঞ্জিতে প্রতিটি নির্দিষ্ট দিনে লেখকের অভিজ্ঞতা বা তাঁর মনোভাব বর্ণিত হয়। সত্যচরণকে কেন্দ্র করেই সমস্ত ঘটনা আবর্তিত হয়েছে এবং কাহিনি পরিণতির দিকে অগ্রসর হয়েছে । সত্যচরণের দিনওয়ারি অভিজ্ঞতা এখানে নেই, এখানে সত্যচরণে যেন বিভূতিভূষণের অভিজ্ঞতাজাত সৃষ্ট চরিত্র।
ড . শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় লক্ষ করেছিলেন , উপন্যাসটির পরিকল্পনার অভিনবত্ব বিস্ময়কর – ইহা সাধারণ উপন্যাস হইতে সম্পূর্ণ নূতন প্রকৃতির । প্রকৃতির যে সুক্ষ্ম কবিত্বপূর্ণ অনুভূতি বিভূতিভূষণের উপন্যাসের গৌরব তাহ্য এই উপন্যাসে চরম উৎকর্ষ লাভ করিয়াছে । প্রকৃতি এখানে মুখ্য মানুষ গৌণ। ” ( বঙ্গসাহিত্যে উপন্যাসের ধারা )
সাধারণভাবে উপন্যাসে মানবপ্রাধান্য হয় । কারণ , আগেই বলা হয়েছে যে , উপন্যাস মুখ্যত মানবজীবনের কাহিনি । এই উপন্যাসেও প্রকৃতি মানবসম্পর্ক – বহির্ভূত নয় । এখানে মানুষ এবং প্রকৃতি অন্তরঙ্গসূত্রে প্রথিত । ‘ আরণ্যক ‘ অর্থ অরণ্য – সম্পর্কিত । ভাই অরণাপ্রকৃতি এবং অরণ্যমানুষ এখানে সমান গুরুত্বের দাবিদার । এখানে কখনো প্রকৃতি মানুষের হয়ে কথা বলেছে আবার কোথাও মানুষই প্রকৃতির হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছে । কিন্তু বিভূতিভূষণের নায়ক সত্যচরণ তো ‘ প্রস্তাবনা ‘ – তে স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছিল , ‘ শুধু বনপ্রান্তর নয় , কত ধরণের মানুষ দেখিয়াছিলাম । ‘ শুধু বনপ্রাপ্তরের বর্ণনায় উপন্যাস হয় না , মানুষই বনপ্রান্তরের স্রষ্টা , আস্বাদক , মানুষই অরণ্যপ্রকৃতিকে সজীব করে তোলে । তাই ‘ আরণ্যক ‘ – এ শেষ পর্যন্ত মানুষেরই প্রাধান্য। অরণ্য প্রকৃতিকে ছেড়ে আসার জন্য সভাচরণের যত না কষ্ট হয়েছে , তার চেয়েও বেশি কষ্ট হয়েছে অরণ্যলালিত মানুষগুলিকে ছেড়ে আসার জন্য । নাঢ়া লবটুলিয়ার বিস্তৃত অরণ্যপ্রাস্তবকে বিনষ্ট করার জন্য সত্যচরণের মনে একটা অপরাধবোধ ছিল , আর মমত্ববোধ ছিল সেখানকার মানুষগুলির প্রতি ‘ কেমন আছে কুস্তা , কত বড় হইয়া উঠিয়াছে সুরডিয়া , মটুবনাথের টোল আজও আছে কিনা , ভানুমতী তাহাদের সেই শৈলবেষ্টিত আরণ্যভূমিতে কি করিতেছে , রাখালবাবুর স্ত্রী , ধ্রুবা , গিরিধারীলাল , কে জানে এতকাল পরে কে কেমন অবস্থায় আছে ।… আর মনে হয় মাঝে মাঝে মঞ্চীর কথা । অনুতপ্তা মঞ্চী কি আবার স্বামীর কাছে ফিরিয়াছে , না আসামের চাবাগানে চায়ের পাতা তুলিতেছে আজও । কতকাল তাহাদের আর খবর রাখি না ।
১৯২৭ – এর ৩০ নভেম্বর – এর দিনপঞ্জিতে (‘স্মৃতির রেখা’) বিভূতিভূষণ তাঁর উপন্যাস – ভাবনার পরিচয় দেন এইভাবে, ‘মানুষের সত্যিকার ইতিহাস কোথায় লেখা আছে। জগতের বড় বড় ঐতিহাসিকগণ যুদ্ধবিগ্রহের ঝল্পনায়, সম্রাট সম্রাজ্ঞী সেনাপতি মন্ত্রীদের সোনালী পোশাকের জাঁকজমকে দরিদ্র গৃহস্থের কথা ভুলে গিয়েছেন । পথের ধারে আমগাছে তাদের পুঁটলি বাঁধা ছাড় কবে ফুরিয়ে গেল , কবে তার শিশুপুত্র প্রথম পাখী দেখে সানন্দে মুগ্ধ হয়ে ডাগর শিশুচোখে চেয়েছিল , সন্ধ্যায় ঘোড়ার হাট থেকে ঘোড়া কিনে এলে পল্লীর মধ্যবিত্ত ছেলে তার মায়ের মনে কোথায় ঢেউ বইয়েছিল — দু হাজার বছরের ইতিহাসে সে সব কথা লেখা নেই — থাকলেও বড় কম । এরপরেই আরও একধাপ এগিয়ে তিনি বলেন , ‘ কিন্তু আরও সুক্ষ্ম , আরও তুচ্ছ জিনিসের ইতিহাস চাই । আজকের তুচ্ছতা হাজার বছর পরের মহাসম্পদ। মানুষ মানুষের বুকের কথা শুনতে চায় । ‘ একজন মহৎ স্রষ্টার এ এক অসামান্য আত্মোদঘাটন । ‘ পথের পাঁচালী ‘ বা ‘ আরণ্যক ‘ – এর স্রষ্টাকে এর মধ্যেই খুঁজে পাওয়া যাবে । রাজারাজড়ার কাহিনি বা নিছক প্রকৃতিবর্ণনাকে তিনি উপন্যাস বলে মনে করেন না । উপন্যাস বলবে মানুষের বুকের কথা , উপন্যাসে মানুষের প্রাণের স্পন্দন শোনা যাবে , ‘ আরণ্যক ‘ – এ এই দুয়েরই উপস্থিতি লক্ষ করা যাবে ।
ড . রবীন্দ্রকুমার দাশগুপ্ত ‘ আরণ্যক ‘ – এর উপন্যাসলক্ষণ আলোচনা প্রসঙ্গে যে কথা বলেছিলেন তা এই প্রসঙ্গে স্মরণ করা যেতে পারে , ‘ একখানি সার্থক উপন্যাসের কাহিনির তিনটি বিশেষ গুণ — ব্যাপকতা , গভীরতা ও অখণ্ডতা । যে কাহিনির মধ্যে জীবনের বিচিত্র ব্যাপার স্পষ্ট হইয়া ওঠে নাই , সে কাহিনি জীবনের অন্তস্তলে প্রবেশ করে নাই সে কাহিনিকে সার্থক উপন্যাস বলি না । তৃতীয়ত , সার্থক উপন্যাসের কাহিনি এক অখণ্ড বস্তু , ইহাতে মানুষের ভাব , চিত্তা ও কর্মের বিচিত্রমুখিতা পাঠকের সামনে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ সুষম জগৎ উপস্থিত করে । ইহার ছোট – বড় ঘটনা ও চরিত্র , ইহার বিভিন্ন পরিবেশ , ক্রমশ মনুষ্য জীবনের একটি মহান সত্যকে উদ্ঘাটিত করে । যে কাহিনিতে এই অখণ্ডতা নাই , সেই কাহিনিতে পরিণতিও নাই , অর্থাৎ সে কাহিনি অপরিণত । বস্তুত কাহিনির অখগুতা মূলত ঔপন্যাসিকের দৃষ্টির অখণ্ডতা । ( ভূমিকা , ‘ বিভূতি রচনাবলী ‘ , পঞ্চম ) ।
এই উপন্যাসের কাহিনির মধ্যে রয়েছে মহাকাব্যিক বিস্তার । তাই এখানে সত্যচরণ নায়ক হলে নায়িকা হন বিশাল অরণ্যপ্রকৃতি । এই প্রকৃতি নারীর মতোই রহস্যময় এবং জটিল । ধীরে ধীরে সত্যচরণের সামনে সে নিজের রহস্য যেন উন্মোচিত করতে থাকে।
প্রকৃতির বিভিন্নরূপ একদিকে যেমন সত্যচরণকে একাধারে বিস্মিত , মুগ্ধ ও শঙ্কিত করেছিল , অপরদিকে প্রকৃতিলালিত মানুষগুলিও তাকে এক নতুন অভিজ্ঞতা এনে দেয় । কিন্তু কেবল ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণাই উপন্যাসের প্রধান বৈশিষ্ট্য নয় , তা একই সঙ্গে একটি জাতি ও সভ্যতার উত্থান ও পতনেরও ইতিহাস । রাজা দোবরু পান্নার পূর্বপুরুষদের সমাধিস্থলে দাঁড়িয়ে সত্যচরণের যে মনে হয়েছিল ‘ আমি , বনোয়ারী সেই বিজয়ী জাতির প্রতিনিধি , বৃদ্ধ দোবরু পান্না , তরুণ যুবক জগরু , তরুণী কুমারী ভানুমতী সেই বিজিত পদদলিত জাতির প্রতিনিধি — উভয় জাতি আমরা এই সন্ধ্যার অন্ধকারে মুখোমুখি দাঁড়াইয়াছি ‘ — তা ঐতিহাসিক সত্যেরই প্রতিধ্বনি । রাজা দোবরু পান্নার বিপর্যয়ের মধ্যে ইতিহাসের যে বিরাট ট্র্যাজেডি ‘ পাঠকের চোখের সামনে উদ্ঘাটিত হয় — তাই উপন্যাসটিকে মহাকাব্যিক উচ্চতায় তুলে দেয় । এখানেই উপন্যাস হিসেবে ‘ আরণ্যক ‘ – এর সার্থকতা।
সহায়ক গ্রন্থ:
1. Netaji Subhas Open University- Study Material (PGBG).
2. বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়- রচনা : ‘আরণ্যক’