Banglasahitta

Welcome to Banglasahitta

One Step to the Heart

Banglasahitta
Banglasahitta

Welcome to Banglasahitta

One Step to the Heart

Banglasahitta

বনফুলের ‘দিবা-দ্বিপ্রহর’ ছোটগল্পের মূলভাব বা মূলকাহিনি, চরিত্রসমূহ, পটভূমি ও প্রেক্ষাপট, শিল্পমূল্য ও সাহিত্যমূল্য বিচার এবং নামকরণের সার্থকতা বিচার!

অন্ধ বিশ্বাস আর কুসংস্কারের বশে মানবজীবনের চরম দুর্ভোগের কথা রূপায়িত হয়েছে “দিবা-দ্বিপ্রহর” গল্পে। গল্পটিতে সাপের ওঝার প্রতি মানুষের মূঢ় আস্থাকে বনফুল হাস্যরসিকতার মধ্য দিয়ে ধিক্কার দিয়েছেন।

দিবা-দ্বিপ্রহরের প্রচণ্ড রােদের মধ্যে লােকের ভীষণ ভীড় কারণ হারু ঘােষের মেজ ছেলে ন্যাপলাকে যে গােখুরে সাপটি সকালে কামড়েছিল, তাকে ইটের গাদা থেকে বের করে বিশুবাগদী বল্লমের আগায় বিধে রেখেছে। দূরে এক ব্যক্তি গাছতলায় বসে ছাতু খাচ্ছিল। সে ভিড়ে যােগদান করেনি। খানিক পরে সেই আগন্তুক এমন আচরণ করে এবং কথাবার্তা বলে যাতে সকলের ধারণা হয়, ঐ ব্যক্তি যথার্থ গুণী ওঝা। আগন্ত্রক বলল, পায়ের বাঁধন খুলে দাও।’ পায়ের বাঁধন খােলা হল। তারপর বলল, “সাপটাকে ছেড়ে দাও।’ বিশুবাগদী বলল, “ফের যদি ছুটে গিয়ে কামড়ায় কাউকে? আগন্তুক বলে, “কামড়াবে? আচ্ছা আমি ধরছি, খুলে নাও তুমি বল্পম। কামড়াবে? চালাকি নাকি?” নির্ভয়ে এগিয়ে গিয়ে আগন্তুক সাপটিকে ধরল, ধরিবামাত্র সাপটি সগর্জনে তাহার ডান হাতে একটা ছােবল বসাইয়া দিল। এতে বিন্দুমাত্র বিচলিত না হয়ে আগন্তক বাম হাতে সাপটিকে ধরে গর্জন করে উঠল, তারপর বল্লম খুলে নেওয়া হল। সাপটি আগন্তুকের বাম হাতেও কামড়ে দিল। তখন আগন্তুকের মুখে অদ্ভুত হাসি। অট্টহাস্যে চতুর্দিকে কাঁপিয়ে তুলল। সাপটিকে আগন্তক বলল, “রাগ করছ কেন, চাঁদ, চুমু দাও একটা আমাকে।’ সাপটি তৎখণাৎ ওঝার গণ্ডদেশে দংশন করল। সন্ধ্যার পূর্বে দেখা গেল, “হারু ঘােষের মেজ ছেলে এবং আগন্তুক উভয়েরই মৃতদেহ পাশাপাশি পড়িয়া রহিয়াছে। সাপটা নাই।” তারপর দারােগা এস আগন্তুককে চিনতে পেরে বললেন “একেই তাে আমরা খুঁজছি। শােকার্ত হারু ঘােষ দারােগার কাছে আগন্ত্রকের পরিচয় জানতে চাইলে দারােগা বলেন- “এ একটা পাগল। পাগলা গারদ থেকে পালিয়ে এসেছে।”

প্রকৃত পরিচয় না জেনে অন্ধ বিশ্বাসের বশে জীবনে কতবড় সাংঘাতিক অঘটন ঘটতে পারে বিজ্ঞানী মেজাজের সাহিত্যিক তা এ গল্পে দেখিয়েছেন। যাকে এতক্ষণ সকলে ভেবেছিল মস্তবড় ওঝা, পরে জানতে পারল যে, সে পাগলা গারদ থেকে পালিয়ে আসা একটি পাগল।

সহায়ক গ্রন্থ

বনফুলের ছােটগল্প উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচ.ডি. (বাংলা) উপাধির জন্য প্রদত্ত গবেষণা অভিসন্দর্ভ

গবেষক: সুবল কান্তি চৌধুরী

তত্ত্বাবধায়ক: ড. নিখিল চন্দ্র রায় বাংলা বিভাগ, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত

১. বাংলা ছােটগল্প’ – শিশির কুমার দাস।

২. ‘বনফুলের ছােটগল্প সমগ্র’ – চিরন্তন মুখোপাধ্যায় সম্পাদিত।

৩. ‘বনফুলের ফুলবন’ – ড. সুকুমার সেন।সাহিত্যলােক।

৪. ‘বনফুলের উপন্যাসে পাখসাট শােনা যায় প্রবন্ধ—মনােজ চাকলাদার।

৫. ‘পশ্চাৎপট – বনফুল (১৬ – তম খণ্ড)।

আর্টিকেল’টি ভালো লাগলে আপনার ফেইসবুক টাইমলাইনে শেয়ার দিয়ে দিন অথবা পোস্ট করে রাখুন। তাতে আপনি যেকোনো সময় আর্টিকেলটি খুঁজে পাবেন এবং আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন, তাতে আপনার বন্ধুরাও আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হবে।

গৌরব রায়

বাংলা বিভাগ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট, বাংলাদেশ।

লেখকের সাথে যোগাযোগ করতে: ক্লিক করুন

6.7k

SHARES

Related articles

সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত এর জীবন ও সাহিত্যকর্ম

সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত (১১ ফেব্রুয়ারি ১৮৮২ – ২৫ জুন ১৯২২) আধুনিক বাংলা সাহিত্যের এক গুরুত্বপূর্ণ কবি, যাঁর কবিতা এবং ছড়ার জন্য তিনি বিশেষভাবে পরিচিত। তাঁর জন্ম

Read More

রাজিয়া খান এর জীবন ও সাহিত্যকর্ম

রাজিয়া খান (১৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৬ – ২৮ ডিসেম্বর, ২০১১) প্রখ্যাত বাংলাদেশী সাহিত্যিক, যিনি শুধু লেখালেখির জগতে নয়, মঞ্চ নাটকেও উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। তার পুরো নাম

Read More
Gourab Roy

Gourab Roy

I completed my Honors Degree in Bangla from Shahjalal University of Science & Technology in 2022. Now, I work across multiple genres, combining creativity with an entrepreneurial vision.

বিশ্বসেরা ২০ টি বই রিভিউ

The content is copyright protected.