বাস্তববাদের সংজ্ঞার্থ: মহৎ শিল্প পুঁজিবাদী সমাজের বিচ্ছিন্নতা ও ভঙ্গুরতাকে প্রতিরোধ করে এবং মানবিক সমগ্রতার এক উজ্জ্বল বহুমুখী চিত্র রচনা করে । গেয়র্গ লুকাচ শিল্পের এই ধারাকে বলেছেন রিয়ালিজম।
কবীর চৌধুরীর মতে Realism হলো ‘উনবিংশ শতাব্দীতে বিকাশ লাভ করা একটি সাহিত্যক আন্দোলন, মতবাদ, দৃষ্টিভঙ্গি। সাহিত্যিক যখন তার সৃষ্টিকর্মে জীবন ও প্রকৃতিকে বস্তুনিষ্ঠভাবে তার যথাযথ রূপে রূপায়িত করতে প্রয়াস পান তখনই বাস্তববাদী তথা রিয়েলিস্টিক হয়ে ওঠে।’
বদিউর রহমান বলেছেন, শিল্প-সাহিত্যে জগৎ, জীবন এবং প্রকৃতিকে যথাযথ বস্তুনিষ্ঠ রূপে উপস্থাপন করাই ‘বাস্তববাদ’ নামে অভিহিত ইতিহাসের একটি যুগে যখন শুধু দিনযাপন ও প্রাণ ধারণই জরুরি হয়ে পড়েছে তখন মানবমনের কতকগুলো বিশেষ প্রবণতা জেগেছে যার ফলে পারিপার্শ্বিক গণ্ডির বাইরে দৃষ্টি দেওয়ার সময় নেই। প্রয়োজন বোধ নেই। অনেক জিনিস যা একসময় কাব্যে শিল্প কল্পনায় স্থান পেত, কিন্তু জীবনে যা ঘটে না বলে, আর ঘটলেও প্রাণ ধারণের গ্লানিতে বিবর্ণ বিরক্ত একালের মনের কাছে তা অসত্য বলে পরিগণিত পরিত্যক্ত। তাই এই যুগের সাহিত্য ও শিল্পে এমন বস্তুই স্থান পেল যা একালের মনের কাছে গ্রাহ্য।
অন্যভাবে বলা যায় দৃষ্টিগ্রাহ্য বিষয়বস্তু, চেনা-জানা বা পরিচিত কোন ঘটনা বা অভিজ্ঞতার বাস্তব অবস্থাকে আবেগহীন নিরাসক্তভাবে উপস্থাপনের নামই বাস্তববাদ।
আরো পড়ুন: (বিষয়ের উপর ক্লিক করুন)
বাস্তববাদ কী বা বাস্তববাদ কাকে বলে?
বাস্তববাদের বৈশিষ্ট্যগুলো আলোচনা করুন
বাস্তববাদের উদ্ভবের ইতিহাস ও ক্রমবিকাশ
সাহিত্যে বাস্তববাদের প্রভাব সম্পর্কে লিখুন বা বাস্তববাদী সাহিত্য কর্মের পরিচয় দিন