Banglasahitta

Welcome to Banglasahitta

One Step to the Heart

Banglasahitta

Welcome to Banglasahitta

One Step to the Heart

বাগযন্ত্র বা বাক্-প্রত্যঙ্গ কাকে বলে? বাগযন্ত্রের সংজ্ঞার্থসহ বাকযন্ত্রের স্বরূপ ও পরিসর বর্ণনা করো!

বাগযন্ত্র: ধ্বনি উৎপাদনের জন্য মানব শরীরের যেসব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ব্যবহৃত হয় সেগুলোকে একত্রে বাকযন্ত্র বলে।

বাগযন্ত্রের কাজ দুইটি: 

১. জৈবিক কাজ ও

২. মানবিক কাজ।

জৈবিক কাজকে প্রাথমিক কাজও বলা হয়ে থাকে। জৈবিক কাজের প্রধান উদ্দেশ্য মূলত দুইটি:

১. শ্বাসক্রিয়া পরিচালনা করা এবং

২. খাদ্য গ্রহণ করা।

জৈবিক প্রয়োজন মেটানোর লক্ষ্য হলেও সময় ও সভ্যতার বিবর্তনে বাকযন্ত্রের কর্মক্ষমতা হয়েছে ব্যাপ্ত ও প্রসারিত। ধ্বনি উচ্চারণে এগুলি পর্যাপ্ত ভূমিকা পালন করে আসছে। তাৎক্ষণিকভাবে মনে হয় মুখ ও গলার সাহায্যেই আমরা ধ্বনি উচ্চারণ করি বা কথা বলি। কিন্তু ধ্বনি উচ্চারণে সম্পূর্ণ ভেতরের প্রত্যঙ্গগুলি ছাড়াও আরো কিছু প্রত্যক্ষ জড়িত। বস্তুত শ্বসন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রত্যঙ্গের সাহায্যে বাতাসের পরিমাণ ও গতি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মানুষ ধ্বনি উচ্চারণ করে।

বাগযন্ত্রের শ্রেণীবিভাগ

আধুনিক ভাষাবিজ্ঞানীরা বাগযন্ত্রকে ১৪ টি ভাগে ভাগ করেছে। এগুলো হলো: ফুসফুস, বায়ুনালী বা শ্বাসনালী, স্বরযন্ত্র, স্বররন্ধ্র, অধিজিহ্বা, আলজিভ, স্বরতন্ত্র, গলনালি, জিহ্বা, তালু, দাঁত, নাক ও চোয়াল। নিম্নে বাগযন্ত্রের শ্রেণীবিভাগ আলোচনা করা হলো।

১. ফুসফুস (Lungs): ফুসফুস বাগযন্ত্রের প্রথম অংশ। বাইরে থেকে নিঃশ্বাস বায়ু প্রথমে ফুসফুসে আসে এবং তারপর ফুসফুসের চাপ থেকে বাতাস সঞ্চালিত হয়ে মানব ভাষার সবচেয়ে বেশি ধ্বনি উৎপন্ন হয়। এটি সরাসরি ভাষা বা ধ্বনি উৎপাদন না করলেও ভাষা বা ধ্বনি উৎপাদনে সাহায্য করে। তাই বাগ-প্রত্যঙ্গের মধ্যে ফুসফুসের গুরুত্ব অপরিসীম।

২. শ্বাসনালি বা বায়ুনালি (Trachea): মানবভাষার ধ্বনির প্রাথমিক সংগঠন শ্বাসনালীর মাধ্যমে হয়। বায়ুনালি বা শ্বাশনালীর মধ্য দিয়ে ফুসফুসের বায়ু আসা-যাওয়া করে। শ্বাসনালি  সরাসরি কোনো ধ্বনি উৎপাদন না করলেও ধ্বনি উৎপাদনে সাহায্য করে।

৩. স্বরযন্ত্র (Larynx): স্বরযন্ত্র হচ্ছে বাগযন্ত্রের প্রধানতম প্রত্যঙ্গ। স্বরযন্ত্রের ভেতরে থাকা স্বরতন্ত্রী বিভিন্নভাবে কাঁপে এবং এ থেকেই প্রধানত বাগধ্বনি উৎপন্ন হয়। পুরো স্বরযন্ত্রটির গঠন অনেকটা বাক্সের মতন যা কার্টিলেজ ও ক্ষুদ্রপেশী (cartilage and muscle) দ্বারা গঠিত। বাইরে থেকে (বিশেষ করে পুরুষ মানুষের) কন্ঠার উপরে উচু হয়ে দেখা যায় বলে ইংরেজিতে এটি Adam’s Apple নামে পরিচিত। Adam’s Apple এর গল্পটি মুহম্মদ আবদুল হাই- তাঁর ‘ধ্বনিমুঞ্জসা’ গ্রন্থে বলেছেন।

৪. স্বররন্ধ্র (Glottis): স্বরতন্ত্রীর মধ্যবর্তী সৃষ্ট পথটিকে বলে ‘গ্লটিস’। স্বররন্ধ্র দেখতে ত্রিকোণাকৃতির, অনেকটা উল্টো ইংরেজি ‘ভি’ এর মতো।

  • স্বররন্ধ্রে বায়ুপ্রবাহ দ্রুত হলে ঘোষ ধ্বনির সৃষ্টি হয়।
  • স্বররন্ধ্রে বায়ুপ্রবাহ ধীর গতিতে হলে অঘোষ ধ্বনির সৃষ্টি হয়।
  • স্বরতন্ত্রের অনুরণের ফলে হ্রস্ব ও মীড়ের উচ্চতা নির্ভর করে।

৫. অধিজিহ্বা (Epiglottis): বাগধ্বনি উৎপন্নের ক্ষেত্রে এটি প্রত্যক্ষভাবে কাজে লাগে না। মানুষ যখন কোনো কিছু গিলে খায় তখন অধিজিহ্বা প্রতি ঢোকের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে শুয়ে পড়ে শ্বাসনালিকে বন্ধ করে দেয় যাতে কোনো খাদ্যকণা বা তরল ফুটা শ্বাসনালীতে প্রবেশ করতে না পারে। দৈবাৎ কখনো কোনো কিছু ঢুকে গেলে মানুষের বিষম লাগে।

৬. আলজিভ (Uvula): কোমল তালুর পেছনে কলাতন্তুর সাহায্যে তৈরি এবং দেখতে অনেকটা অর্বুদ বা আবের মতো। মনে হয় এক টুকরা মাংসপিণ্ড যেন ঝুলে আছে। ধ্বনি উৎপাদনে আলজীভের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।

৭. গলনালীর দেয়াল (Pharynx wall): আপাতত মনে হয় এটি কোনো বাগযন্ত্র বা বাগযন্ত্রের অংশ নয় । কিন্তু একটু খেয়াল করে দেখলেই বোঝা যায় যে, এটি না থাকলে স্বাভাবিকভাবে কথা বলা সম্ভব নয়। ফুসফুসাগত বাতাস স্বরযন্ত্রের মধ্য দিয়ে পার হয়ে জিহ্বার গোড়ালী এবং গলনালীর দেয়াল দ্বারা তৈরি স্বরপথের মধ্য দিয়েই যায় । এটিকে বাগযন্ত্র বলার আরো বিশেষ কারণ এই যে , গলনালীর দেয়ালের এই স্থান থেকে কোনো ভাষার বিশেষ প্রকার ধ্বনি (যেমন-আরবি ভাষার & th) জাতীয় ধ্বনি Pharynx sound) উৎপন্ন হয়।

৮. স্বরতন্ত্র (Vocal cords): স্বরবন্ধের মধ্যে দুটি সুষম তন্তু আছে। এই তন্ত্র – যুগলকে একসঙ্গে বলা হয় স্বরতন্ত্র।

৯. জিহ্বা (Tongue): বলা হয়ে থাকে জিহ্বাই নাকি প্রধানতম বাগযন্ত্র। হিন্দি-উর্দু ভাষায় সেজন্য জিহ্বাকে বলে “জবান” যার আসল অর্থ ‘কথা’। বাগযন্ত্র হিসেবে জিহ্বার গুরুত্ব অপরিসীম। এটি না থাকলে সত্যিই মানুষ ‘কথা’ বলতে পারতো না। যাদের জিহ্বার গড়নে জন্মগত ত্রুটি থাকে অথবা কারো যদি কোনো কারণে জিহ্বার সাময়িক অসুবিধা ঘটে (অতিরিক্ত মাদক সেবনে, দুর্ঘটনায় বা অসুস্থতায় ) তবে তার কথা বলায় অসুবিধা হয়, কথা স্পষ্ট বোঝা যায় না।

বাগযন্ত্র হিসেবে জিহ্বার প্রধান চারটি ভাগ।

ক. জিহ্বার গোড়ালী (root of the tongue)

খ. পশ্চাৎ জিহ্বা (back of the tongue)

গ. মধ্য জিহ্বা (mid of the tongue)

ঘ. জিহ্বার অগ্রভাগ (Irony of the tongue)

১০. দাঁত (Teeth): মানুষের দু’পার্টি দাঁতের মধ্যে নিচের পার্টির দাঁত ধ্বনি উচ্চারণে ততটা গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা রাখে না, কিন্তু উপরের পাটির দাঁতের গুরুত্ব যথেষ্ট। উপরের সামনের চারটি দাঁত ধ্বনি উচ্চারণে প্রত্যক্ষভাবে কাজ করে। বিশেষ করে সামনের মাঝখানের দুটি বড় দাঁতের কার্যকারিতা অপরিসীম। প্রবীণ ব্যক্তি মাসের সামনের দাঁত নাই (অথবা উপরের পাটির আরো কিছু দাঁত পড়ে গিয়েছে) তাঁদের বচন থেকে সহজেই বোঝা যায় সামনের উপরের দাঁতের উচ্চারণ ক্ষেত্রে গুরুত্ব।

১১. তালু (Palate): তালুকে বলা হয় মুখের ছাদ (roof of the mouth)। তালু মুখ্যত দুটি অংশে বিভক্ত:

১. শক্ততালু ও

২. নরমতালু।

১২. ঠোঁট (Lips): ধ্বনি উৎপাদনে ঠোঁঠের গুরুত্ব অপরিসীম। সুকুমার সেন (১৯৯৩: ৩১) অবশ্য দুই ঠোঁটের দুটি স্বতন্ত্র নাম দিয়েছেন। তিনি উপরের ঠোঁটকে বলেছেন ‘ওষ্ঠ’, আর নিচের ঠোঁটকে অভিহিত করেছেন ‘অধর’ বলে। দুই ঠোঁটের মধ্যকার ফাঁকের তারতম্য ভেদে স্বরধ্বনির প্রকৃতি নির্ণয় করা হয়। উচ্চারণস্থান ও উচ্চারণরীতি বিচারেও ঠোঁঠের গুরুত্ব অপরিসীম।

১৩. চোয়াল (Jaws): চোয়াল থেকে সরাসরি কোনো ধ্বনি উচ্চারিত হয় না। কিন্তু চোয়ালের গতিশীলতা ছাড়া স্বরধ্বনি ও ব্যঞ্জনধ্বনির উচ্চারণ সম্ভব নয়। তাই বাকপ্রত্যঙ্গ হিসেবে চোয়ালের গুরুত্ব অপরিসীম।

১৪. নাক (Nose): নাক হল মেরুদণ্ডীর মুখের সামনে থাকা একপ্রকার স্ফীত সংবেদক অঙ্গ। নাকের নাসারন্ধ্র দিয়ে শ্বাসক্রিয়ার বায়ু প্রবেশ ও প্রস্থান করে। আর এভাবেই নাক মানবভাষার ধ্বনি উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

সহায়ক গ্রন্থ 

১. জীনাত ইমতিয়াজ আলী: ‘ধ্বনিবিজ্ঞানের ভূমিকা’

২. মহাম্মদ দানীউল হক: ‘ভাষাবিজ্ঞানের কথা’

৩. মুহম্মদ আবদুল হাই: ‘ধ্বনিবিজ্ঞান ও বাংলা ধ্বনিতত্ত্ব’

৪. আবুল কালাম মনজুর মোরশেদ: ‘আধুনিক ভাষাতত্ত্ব’

আর্টিকেল’টি ভালো লাগলে আপনার ফেইসবুক টাইমলাইনে শেয়ার দিয়ে দিন অথবা পোস্ট করে রাখুন। তাতে আপনি যেকোনো সময় আর্টিকেলটি খুঁজে পাবেন এবং আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন, তাতে আপনার বন্ধুরাও আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হবে।

গৌরব রায়

বাংলা বিভাগ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট, বাংলাদেশ।

লেখকের সাথে যোগাযোগ করতে: ক্লিক করুন

6.7k

SHARES

Related articles

"সোজন বাদিয়ার ঘাট" কাব্যের শৈল্পিক বৈশিষ্ট্য ও কবিমানস

“সোজন বাদিয়ার ঘাট” কাব্যের শৈল্পিক বৈশিষ্ট্য ও কবিমানস

ভূমিকা: বাংলা কাব্যের ভুবনে বাংলাদেশের মানসকবি জসীম উদদীনের (১৯০৩-১৯৭৬) আবির্ভাব বিশ শতকের তৃতীয় দশকে। তিনি রবীন্দ্র-নজরুল ও তিরিশের কবিদের বলয় ও প্রভাব মুক্ত থেকে কবিতায় এক নতুন ও ব্যতিক্রম স্বর সৃষ্টি করেছেন। সোজন বাদিয়ার ঘাট (১৯৩৩) কবি জসীম উদদীনের দ্বিতীয় আখ্যান কাব্য। সমকালীন কবিরা যেখানে প্রায় সকলেই নগরচেতনা, নাগরিক জীবন ও আচার-আচরণ সাহিত্য চর্চার ক্ষেত্রে তুলে এনেছেন, জসীম উদদীন সেখানে তার কবিতায় আবহমান বাংলার প্রকৃতি, সমাজ ও সাধারণ মানুষের জীবন-চিত্রকেই আন্তরিক নিষ্ঠা, অকৃত্রিম ভালবাসা ও দরদ দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন। ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’ কবির বিকল্প জীবনবোধ, জীবনপদ্ধতি এবং জীবন অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ উপন্যাসধর্মী রচনা। এ কাব্যে প্রেমভাবনা ও সমাজভাবনা দুইই পরস্পরের পরিপূরক হয়ে উঠেছে। নিম্নে … “সোজন বাদিয়ার ঘাট” কাব্যের শৈল্পিক বৈশিষ্ট্য ও কবিমানস ১. অসাম্প্রদায়িক ও উদার দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয়: “সোজন বাদিয়ার ঘাট” কাব্যে অসাম্প্রদায়িকতা দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় পাওয়া যায়। এ আখ্যান কাব্যে হিন্দু-মুসলিমদের সহাবস্থান, দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও তৎকালীন পরিবেশ ও ঘটনা পরিক্রমায় লিখিত। আবহমানকাল থেকেই বাংলাদেশের অনেক অঞ্চল/গ্রামে হিন্দু-মুসলমানদের একত্রে বসবাস, সম্প্রীতির পরিচয় আছে। বিভিন্ন কারণে দুই ধর্মের মধ্যে মারামারী ও দাঙ্গা-হাঙ্গামা লেগে যায়। কবি এরূপ বর্ণনায় অসাম্প্রদায়িক হিসাবে চরম নিরপেক্ষতার বর্ণনা দিয়েছেন। “নমু পাড়ায় পূজা পরব, শঙ্ক কাঁসর বাজে, … মুসলমানের পাড়ায় বসে ঈদের মহোৎসবে,” ২. প্রেমভাবনা ও সমাজভাবনা দুইই পরস্পরের পরিপূরক: “সোজন বাদিয়ার ঘাট” কাব্যেপন্যাসের প্লট নির্মিত হয়েছে মুসলমান চাষীর ছেলে সোজন আর হিন্দু নমুর মেয়ে দুলীর অপূর্ব প্রেমের কাহিনীকে ঘিরে; তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিগত সামন্ত যুগের জমিদারি প্রথার নিষ্ঠরতার আলেখ্য। গ্রামের হিন্দু বালিকা দুলীর সাথে মুসলমানের ছেলে সোজনের আবল্য বন্ধুত্ব। বন্ধু থেকে আস্তে আস্তে প্রেমে পরিণত হয়। কবিতায়- “নমুদের মেয়ে আর সোজনের ভারি ভাব দুইজনে, লতার সঙ্গে গাছের মিলন, গাছের লতার সনে।“ প্রেমের তুলনায় সমাজ অতিমাত্রায় কাব্যের জায়গা দখল করে নিয়েছে। কাব্যে সামাজিক অনুষঙ্গের উপস্থাপন করেছেন কবি। কবিতাতে তিনি সমাজের সর্বশ্রেণীর মানুষকে আসার আহ্বান করেছেন। সমাজের মানুষের সংস্কৃতি, আচার-ব্যবহার, খেলাধুলা প্রভৃতির পরিচয় পাওয়া যায় কাব্যটিতে। দুলির মায়ের কণ্ঠে সমাজের রূঢ় রূপটি প্রকাশ পায়- “পোড়ারমুখীলো, তোর জন্যেত পাড়ায় যে ঠেকা ভার, চূণ নাহি ধারি এমন লোকেরো কথা হয় শুনিবার!” ৩. জীবনবোধ, জীবনপদ্ধতি এবং জীবন অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ রচনা: কবি পল্লিগীতির সংগ্রাহক হিসেবে কাজ করেছিলেন দীনেশচন্দ্র সেনের সাথে। শহরজীবনে বসবাস করলেও তিনি পল্লিগীতির সংগ্রাহক হিসেবে গ্রামে কাজ করেছেন। ফলে তিনি মানুষের সাথে মিশতে পেরেছেন এবং তাঁর জীবনবোধ ও জীবন অভিজ্ঞতা হয়েছে সমৃদ্ধ। তাঁর জীবনপদ্ধতি ব্যতিক্রমধর্মী এবং বড় কবিতার ধারক হিসেবেই তিনি পরিচিত। ৪. উপন্যাসধর্মী রচনা: “সোজন বাদিয়ার ঘাট” একটি উপন্যাসধর্মী রচনা। কাব্যের কবিতাগুলো জসীম উদদীন উপন্যাসের ঢংয়ে লিখেছেন। এ যেন লোকজ ঐতিহ্যের প্রতীক। ৫. মৌলিক রচনাধর্মী ও অনন্য: অন্যেরা বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ বা ধর্মীয় সম্পর্কিত কাহিনী থেকে নিয়েছেন। কিন্তু কবি জসীমউদ্দীন কাহিনী নিয়েছেন ঘর থেকে, গ্রাম থেকে, পল্লী গ্রাম-বাংলা থেকে। এখানে তিনি মৌলিক ও অনন্য। ৬. আধুনিকতা ও উদারনীতির বৈশিষ্ট্য: সময়কে এড়িয়ে না গিয়ে তাকে স্বীকার করে নিয়ে লেখা আধুনিকতার বৈশিষ্ট্য। প্রাণিজগতের কল্যাণকামনা করে মানবিক হওয়াও আধুনিকতার বৈশিষ্ট্য। এসবের সংমিশ্রণে জসীম উদদীন কবিতায় অবয়ব দিয়েছেন। হিন্দু কিশোরী দুলালী বা দুলী ও মুসলমান কিশোর সুজনের প্রেম নিয়ে মুসলমান ও হিন্দুদের মধ্যে দাঙ্গা লেগে যায়। নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে জসীমউদ্দীন লিখলেন- এক গেরামের গাছের তলায় ঘর বেঁধেছি সবাই মিলে . . . এক মাঠেতে লাঙল ঠেলি, বৃষ্টিতে নাই, রৌদ্রে পুড়ি সুখের বেলায় দুখের বেলায় ওরাই মোদের জোড়ের জুড়ি। ৭. চরিত্র নির্মাণে দক্ষতা: ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’ কাব্যে লেখক চরিত্রের আমদানি করেছেন, চরিত্রের বিকাশ ঘটিয়েছেন এবং চরিত্রের পরিণতি দেখিয়েছেন। চরিত্র যেন অনুভূতির মাধ্যমে কথা বলছে। তিনি চরিত্র অনুযায়ী ভাষার ব্যবহারেও দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। ৮. কাহিনী ও ভাষা বিন্যাসে পাণ্ডিত্য: কাহিনী বিন্যাসে, ভাষা ব্যবহারে এবং উপমা-চিত্রকল্পে তার রচনায় লোক-কাব্য, পুঁথি-সাহিত্য, লোক-সঙ্গীতের কিছু প্রভাব রয়েছে। লোকজ উপাদানের ব্যবহার থাকলেও আঞ্চলিক শব্দের ব্যবহার কম; প্রায় নেই বললেই চলে। এখানেও জসীমের মুন্সিয়ানার পরিচয় পাওয়া যায়। ৯. ছন্দ ও অলঙ্কারের প্রয়োগ: আধুনিক কবিতায় অলঙ্কারের প্রয়োগ লক্ষণীয়। কবি জসীমউদ্দীন কবিতায় উপমা-উৎপ্রেক্ষা, সমাসোক্তি ও অন্যান্য অলঙ্কারের যুতসই ব্যবহার ও প্রয়োগ দেখা যায়। তার অলঙ্কারের বেশিরভাগ উপাদানই লোকজ।

Read More
কপালকুণ্ডলার বংশ পরিচয় কী?

কপালকুণ্ডলার বংশ পরিচয় কী?

কপালকুণ্ডলা: বাংলা সাহিত্যের একটি চরিত্র। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে নবকুমার এক জনবিচ্ছিন্ন দ্বীপে আটকা পড়েন। সেখানে এক কাপালিক তাকে বলি দিতে উদ্যত হয়। তখন কাপালিকের পালিতা কন্যা কপালকুণ্ডলা তার

Read More

Keto Diet Recipes

Keto for Beginners: A Simple 7-Day Meal Plan The ketogenic (keto) diet has taken the health and wellness world by storm, promising weight loss, increased

Read More
শর্মিষ্ঠা কোন ধরনের নাটক?

শর্মিষ্ঠা কোন ধরনের নাটক?

শর্মিষ্ঠা বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক নাটক। এটি রচিত হয় ১৮৫৯ সালে। নাটকটি মহাভারতের কাহিনীকে উপজীব্য করে পাশ্চাত্য রীতিতে রচিত হয়। নাটকটির কাহিনী মহাভারতের আদিপর্বে বর্ণিত

Read More
Gourab Roy

Gourab Roy

I completed my Honors Degree in Bangla from Shahjalal University of Science & Technology in 2022. Now, I work across multiple genres, combining creativity with an entrepreneurial vision.

বিশ্বসেরা ২০ টি বই রিভিউ

The content is copyright protected.